এক নজরে দেখে নেওয়া যাক আসরে এই চার দলের পথচলা।
স্পেন: ১৯৬৪, ২০০৮ ও ২০১২ আসরের চ্যাম্পিয়ন
আসরে স্পেনের শুরুটা ভালো ছিল না মোটেও। গ্রুপ পর্বে সুইডেনের সঙ্গে গোলশূন্য ড্রয়ের পর পোল্যান্ডের বিপক্ষে ১-১ সমতায় শেষ করে ম্যাচ। তবে শেষ রাউন্ডে স্লোভাকিয়াকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে ছন্দে ফেরে প্রতিযোগিতার তিনবারের চ্যাম্পিয়নরা।
শেষ আটে স্প্যানিশদের কঠিন পরীক্ষা নেয় সুইজারল্যান্ড। নির্ধারিত সময়ের পর অতিরিক্ত সময়েও ১-১ সমতার পর টাইব্রেকারে ৩-১ গোলে জেতে স্পেন। তবে শুধু স্কোরলাইনে ফুটে উঠছে না ম্যাচের পুরো চিত্র। অনেকটা সময় একজন কম নিয়েও দারুণ লড়াই করে সুইসরা।
পুরো ম্যাচে ৭২ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য ২৮টি শট নেয় স্পেন, যার ১০টি লক্ষ্যে। সেখানে গোল মাত্র একটি, তাও আবার প্রতিপক্ষের ভুলে। পেনাল্টি শুট আউটে দুটি শট ঠেকিয়ে তাদের নায়ক গোলরক্ষক উনাই সিমোন।
আসরে এখন পর্যন্ত দলটির হয়ে সর্বোচ্চ দুটি করে গোল করেছেন পাবলো সারাবিয়া, আলভারো মোরাতা ও ফেররান তরেস। শেষ চারে তাদের প্রতিপক্ষ অপ্রতিরোধ্য গতিতে ছুটে চলা ইতালি। স্প্যানিশদের অপেক্ষায় তাই আরেকটি কঠিন পরীক্ষা।
ইতালি: ১৯৬৮ আসরের চ্যাম্পিয়ন
গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচের সবগুলোই জিতে নকআউটে আসে ইতালি। কঠিন পরীক্ষা দিতে হয় তাদের শেষ ষোলোয়। অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচে ২-১ গোলে জিতে পরের ধাপে পা রাখে রবের্তো মানচিনির দল। শেষ আটে নজরকাড়া পারফরম্যান্সে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দল বেলজিয়ামকে হারায় তারা ২-১ গোলে। নিজেদের অপরাজেয় যাত্রা টেনে নেয় ৩২ ম্যাচে।
গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচে তারা কোনো গোল হজম না করে প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠায় সাতবার। সব মিলিয়ে টানা ১১ ম্যাচ জাল অক্ষত রাখার পর অস্ট্রিয়ার বিপক্ষেই প্রথম গোল খায় ইতালি।
আসরে এখন পর্যন্ত দলটির হয়ে সর্বোচ্চ দুটি করে গোল করেছেন চিরো ইম্মোবিলে, মাত্তেও পেস্সিনা, মানুয়েল লোকাতেল্লি ও লরেন্সো ইনসিনিয়ে।
ডেনমার্ক: ১৯৯২ আসরের চ্যাম্পিয়ন
আসরে ডেনমার্ক ঘুরে দাঁড়ায় খাদের কিনারা থেকে। প্রথম দুই ম্যাচ হেরে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায়ের শঙ্কায় পড়েছিল ডেনিশরা। তবে শেষ রাউন্ডে রাশিয়াকে ৪-১ গোলে হারিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হিসেবে জায়গা করে নেয় শেষ ষোলোয়।
আসরে দলটির হয়ে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৩টি গোল করেছেন কাসপের ডলবার্গ। সবগুলোই শেষ দুই ম্যাচে। ওয়েলসের বিপক্ষে জোড়া গোলের পর চেকদের বিপক্ষে করেন একটি। পরের ধাপে ইংল্যান্ডের জালে বল পাঠাতে পারবেন কি তিনি?
ডলবার্গ ও তার দলের জন্য কাজটা যে ভীষণ কঠিন হবে, তা বলাই যায়। আসরে এখন পর্যন্ত একমাত্র দল হিসেবে যে কোনো গোল হজম করেনি ইংলিশরা!
ইংল্যান্ড: ১৯৬৮ সালের চার দলের আসরে তৃতীয় ও ১৯৯৬ আসরের সেমি-ফাইনালিস্ট
দুই জয় ও এক ড্রয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নকআউটে ওঠে ইংল্যান্ড। শেষ ষোলোয় দ্বিতীয়ার্ধের দুই গোলে জার্মানিকে বিদায় করে দেয় গ্যারেথ সাউথগেটের দল। এরপর শেষ আটে ইউক্রেনকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে ২৫ বছর পর ইউরোর সেমি-ফাইনালে ওঠে তারা।
আসরে কেইনের সমান ৩টি গোল করেছেন রাহিম স্টার্লিংও। ডেনমার্কের জন্য এই দুজনই হতে পারেন সবচেয়ে বড় হুমকি।
আরেকটি বড় বিষয়, সেমি-ফাইনাল ও ফাইনাল হবে লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে। ঘরের মাঠে দর্শকের উপস্থিতি নিশ্চিতভাবে বাড়তি আত্মবিশ্বাস জোগাবে কেইন-স্টার্লিংয়ের।
সেমি-ফাইনালের লড়াই:
স্পেন-ইতালি
ডেনমার্ক-ইংল্যান্ড