কষ্টের জয়ে আতলেতিকোর খুব কাছে বার্সেলোনা

আন্তর্জাতিক ম্যাচের বিরতির পর প্রথম মাঠে নেমে রিয়াল ভাইয়াদলিদের বিপক্ষে হোঁচট খেতে বসেছিল বার্সেলোনা। শেষ দিকে ব্যবধান গড়ে দিলেন উসমান দেম্বেলে। লা লিগায় টানা ষষ্ঠ জয়ে আতলেতিকো মাদ্রিদের সঙ্গে ব্যবধান ১ পয়েন্টে কমিয়ে আনলো রোনাল্ড কুমানের দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 April 2021, 08:57 PM
Updated : 5 April 2021, 09:43 PM

কাম্প নউয়ে সোমবার রাতে লিগ ম্যাচটি ১-০ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা। অবনমন এড়ানোর লড়াইয়ে থাকা ভাইয়াদলিদ প্রায় পুরোটা সময় দারুণ খেললেও এক জন কম নিয়ে শেষ দিকে পেরে ওঠেনি।

আসরে বাজে শুরুর পর ছন্দে ফেরা বার্সেলোনা এই নিয়ে টানা ১৯ ম্যাচ অপরাজিত রইলো। গত ৫ ডিসেম্বরের পর আর হারেনি তারা। এই সময়ে তাদের জয় ১৬টি, ড্র তিনটি।

আগের দিন সেভিয়ার মাঠে আতলেতিকো মাদ্রিদের হারের পর বার্সেলোনার এই জয়ে শিরোপা লড়াই আরও জমে উঠল। ২৯ রাউন্ড শেষে দিয়েগো সিমেওনের দল ৬৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে। দুইয়ে ফেরা বার্সেলোনার পয়েন্ট ৬৫। তিনে নেমে যাওয়া রিয়াল মাদ্রিদের পয়েন্ট ৬৩।

আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ম্যাচের শুরুটা হয় জমজমাট। প্রথম ১০ মিনিটে দারুণ দুটি আক্রমণ করে ভাইয়াদলিদ। নবম মিনিটে এগিয়েও যেতে পারতো তারা; তবে বসনিয়া-হার্জেগোভিনার ফরোয়ার্ড কেনান কদ্রোর হেড বাধা পায় ক্রসবারে।

প্রথমার্ধের বাকি সময়েও প্রতি-আক্রমণে কয়েকবার ভীতি ছড়ায় পয়েন্ট তালিকার নিচের সারির দলটি। রক্ষণেও দারুণ জমাট ছিল ভাইয়াদলিদ।

বরাবরের মতো বল দখলে আধিপত্য ধরে রেখে খেলতে থাকে বার্সেলোনা। তবে সব মিলিয়ে তাদের প্রথমার্ধের পারফরম্যান্স হতাশাজনক। এসময় লক্ষ্যে তিনটি শট নেয় তারা, তবে এর কোনোটিই প্রতিপক্ষ গোলরক্ষককে তেমন পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি। ৩৯তম মিনিটে মেসির শট স্লাইডে ফেরান ডিফেন্ডার লুকাস ওলাসা।

বিরতির খানিক আগে পেদ্রির নৈপুণ্যে প্রথম উল্লেখযোগ্য সুযোগ পায় বার্সেলোনা। কিন্তু তার ডি-বক্সের বাইরে থেতে নেওয়া নিচু শটটি ঝাঁপিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা করেন গোলরক্ষক জর্দি মাসিপ। ঠিক মতো পারেননি, বল তার হাত ছুঁয়ে পোস্টে লাগে।

দ্বিতীয়ার্ধে প্রথম উল্লেখযোগ্য আক্রমণও করে সফরকারীরা। ৫৭তম মিনিটে ওলাসার জোরালো কোনাকুনি শট পোস্ট ঘেঁষে পাশের জালে লাগে। দুই মিনিট পর মেসির পাস ধরে ডি-বক্সে ঢুকে উসমান দেম্বেলের নেওয়া শট ঝাঁপিয়ে ফেরান মাসিপ। ফিরতি বলে গ্রিজমানের ডাইভিং হেড একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

৬১তম মিনিটে বার্সেলোনার ডি-বক্সে জর্দি আলবার হাতে বল লাগলে পেনাল্টির আবেদন করে ভাইয়াদলিদের খেলোয়াড়রা। তবে রেফারির সাড়া মেলেনি।

প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে ঢুকতে হিমশিম খেতে হচ্ছিল, সেটি সম্ভব হলেও খুব বেশি নিশ্চিত সুযোগ তৈরি হচ্ছিল না। ৭১তম মিনিটে দূর থেকে জোরালো শটে চেষ্টা চালান মেসি, তবে বল পোস্ট ঘেঁষে বাইরে যায়।

৭৯তম মিনিটে রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্তে ১০ জনে পরিণত হয় ভাইয়াদলিদ। বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠা দেম্বেলেকে পেছন থেকে ফাউল করায় অস্কার প্লানোকে সরাসরি লাল কার্ড দেখান রেফারি, যা একটু কঠোর মনে হয়েছে। ধারাভাষ্যকারদের মতেও তাই। প্রতিবাদ জানিয়ে হলুদ কার্ড দেখেন অধিনায়ক মাসিপ।

তিন মিনিট পর বাঁ দিক থেকে আলবার দারুণ ক্রস ভালো পজিশনে পেয়েও বল নিয়ন্ত্রণে নিতে ব্যর্থ হন বদলি নামা ফ্রান্সেসকো ত্রিনকাও। অবশেষে নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে অপেক্ষার শেষ হয়।

ডান দিকের বাইলাইনের কাছ থেকে ফ্রেংকি ডি ইয়ংয়ের ক্রস ডিফেন্ডাররা ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে বাঁ দিকে ফাঁকায় পান দেম্বেলে। বুলেট গতির শটে কাছের পোস্ট দিয়ে জয়সূচক গোলটি করেন ফরাসি ফরোয়ার্ড।

আগামী শনিবার আসরের মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে রিয়ালের মুখোমুখি হবে বার্সেলোনা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের মাঠে লড়াইয়ে নামার আগে জয়টা ভীষণ দরকার ছিল মেসিদের।