শেখ কামাল গোল্ড কাপের নায়ক হতে পারেন যারা

প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়ন, বরাবরের মতো আয়োজকও চট্টগ্রাম আবাহনী।  টুর্নামেন্ট শুরু আগেই জানিয়েছে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপের শিরোপা ফিরে পেতে চায় তারা। গত আসরের সেরা টিসি স্পোর্টসেরও লক্ষ্য থাকবে মুকুট ধরে রাখা।

মোহাম্মদ জুবায়েরমোহাম্মদ জুবায়েরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Oct 2019, 06:56 PM
Updated : 18 Oct 2019, 06:57 PM

লিগ চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস নিতে চাইবে এ মৌসুমেই আরেকটি শিরোপার স্বাদ। ঐতিহ্যবাহী মোহনবাগন, চেন্নাই সিটি এএফসি, টেরেঙ্গানু এফসি কিংবা ইয়াং এলিফ্যান্টস এফসিও চাইবে না খালি হাতে ফিরতে। দলের চাওয়া পূরণের মহাভার যাদের বা যে জুটির ওপর থাকতে পারে, তাদের নিয়ে এ আয়োজন।

বন্দরনগরী চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে ১৯ অক্টোবর শুরু হবে প্রতিযোগিতার তৃতীয় আসর। ২০১৫ সালে প্রথম আসরের শিরোপা জিতেছিল চট্টগ্রাম আবাহনী। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন টিসি স্পোর্টস।

চট্টগ্রাম আবাহনী: মিডফিল্ডে জামাল, আক্রমণভাগে টাগো

চট্টগ্রামবাসীর নিরঙ্কুশ সমর্থন তো থাকবেই, খেলাও খুব ভালো করে চেনা মাঠে। অনেক কিছুই চট্টগ্রাম আবাহনীর পক্ষে। এবারের আসর সামনে রেখে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব থেকে ‘ধারে’ জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূইয়াকে নিয়েছে তারা। ‘আগামীকাল ভারতীয়দের হৃদয় ভাঙতে যাচ্ছি’-রীতিমতো এই ঘোষণা নিয়ে প্রতিপক্ষের মাঠ সল্ট লেক স্টেডিয়াম থেকে ড্র নিয়ে ফেরা এই মিডফিল্ডার হতে পারেন এ টুর্নামেন্টে বাকিদের ‘হৃদয় ভাঙার’ কারণ।

বন্দরনগরীর দলটির আক্রমণভাগে যোগ হয়েছেন ঘানার হয়ে ২০১০ সালের দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ প্রিন্স টাগো। আছে আরও একাধিক বিদেশী, যাদের কারো কারো ইউরোপে খেলার অভিজ্ঞতাও আছে। তাই জামাল মাঝ মাঠ মুঠোয় নিলে, আক্রমণভাগে টাগো অভিজ্ঞতার ডালি মেলে ধরলে, বাকিরা জ্বলে উঠলে গত লিগে অষ্টম হওয়া চট্টগ্রামের দলটি ঘুরে দাঁড়াতেই পারে। পুনরাবৃত্তি করতে পারে প্রথম আসরের সাফল্যের।

বসুন্ধরা কিংস: আক্রমণভাগে সোলেরা-মতিন

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের অভিষেক মৌসুমেই দলের শিরোপা জয়ে আক্রমণভাগে দারুণ আলো ছড়িয়েছিলেন এই দুই ফরোয়ার্ড। কোস্টারিকার হয়ে ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপ খেলা দেনিয়েল কলিন্দ্রেস সোলেরা  গোল করেন ১১টি। দেশি ফরোয়ার্ড মতিন মিয়াও কম যাননি;  তারও গোল ১১টি।

শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র থেকে ইয়াসিন খান এবার পাড়ি জমিয়েছেন কিংসের আঙিনায়। ভারতের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে সুনীল ছেত্রী, আশিক কুরুনিয়ানদের অকার্যকর করে রাখা এই ডিফেন্ডারও হতে পারেন কিংসের সাফল্যের ‘নায়ক’। পরিক্ষীত এই যোদ্ধারা ঢাল হয়ে দাঁড়ালে স্বাধীনতা কাপ ও লিগ শিরোপার পর প্রথমবার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক গোল্ড কাপে অংশ নিয়েই বাজিমাত করতে পারে বসুন্ধরা।

মোহনবাগান:  রক্ষণে সাইরাস, মিডফিল্ডে সানচেস

গুঞ্জন মোহনবাগান নাকি দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে এসেছে। ২০১৪-১৫ মৌসুমে আই লিগের চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলটির বর্তমান কোচ কিবু ভিচুনা গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন শিরোপা উঁচিয়ে ধরাই লক্ষ্য। স্প্যানিশ কোচের ভরসার জায়গা হতে পারে স্বদেশি মিডফিল্ডার হাভিয়ের সানচেস মুনোস, যার বেড়ে ওঠা রিয়াল মাদ্রিদের যুব একাডেমিতে। রক্ষণে তার নির্ভরতা হতে পারে ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর ডিফেন্ডার ড্যানিয়েল সাইরাস, যার  অভিজ্ঞতা আছে মেজর সকার লিগে খেলার। দলটিতে আছে স্প্যানিশ ডিফেন্ডার ফ্রান্সিসকো মোরান্তে,  মিডফিল্ডার সোসেবা বেইতিয়া। মোহনবাগান তাদের ওয়েবসাইটেও জানিয়েছেন প্রতিযোগিতার নিয়মের সুযোগ অনুযায়ী পাঁচ বিদেশিকে রেখে একাদশ সাঁজাতে পারেন।

টেরেঙ্গানু এফসি: ‘আবাহনীর’ লি টাক

এদেশের ঘরোয়া ফুটবলে নিকট অতীতে পারফরম্যান্স দিয়ে ছাপ রেখে যাওয়া বিদেশিদের মধ্যে লি টাক অন্যতম। ইংলিশ এই ফরোয়ার্ড ২০১৫-১৬ মৌসুমে আবাহনীর লিগ চ্যাম্পিয়ন করার পাথে ১০ গোল করেছিলেন। সতীর্থদের গোলে অবদান রাখা, নিখুঁত ফ্রি কিকে প্রতিপক্ষ গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে দেওয়া এই ইংলিশ ফরোয়ার্ড আবাহনীকে বিদায় বলেন মৌসুম শেষে। মালয়েশিয়ার দল টেরেঙ্গানু এফসির হয়ে চট্টগ্রামে এসেছি তিনি। এখন পর্যন্ত মালয়েশিয়ান সুপার লিগে শিরোপা স্বাদ না পাওয়া টেরেঙ্গানু তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশের ফুটবলকে ভালোভাবে চেনা ৩১ বছর বয়সীর দিকে।

চেন্নাই সিটি এফসি: স্প্যানিশে ঠাসা আক্রমণভাগ

ইন্ডিয়ান সুপার লিগ (আইএসএল) জয়ে দলের আক্রমণভাগে তিন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড ছিলেন দুর্দান্ত। পেদ্রো মানসি ২১টি, সান্দ্রো রদ্রিগেস ৯টি, নেস্তোর গর্দিলো গোল করেছিলেন ৮টি। এই ধারালো আক্রমণভাগ নিয়ে এলে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক গোল্ড কাপে এলে চেন্নাই সিটি এফসি উড়িয়ে দিতে পারে যেকোনো দলকে।