৭ গোলের রোমাঞ্চে সালসবুর্ককে হারাল লিভারপুল

হার দিয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শুরু করা লিভারপুল ৩-০ গোলে এগিয়ে গিয়ে ছিল সহজ জয়ের পথে। দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে সমতা ফিরিয়ে চমকে দেয় সালসবুর্ক। তাদের রূপকথা শেষ সেখানেই। আবার এগিয়ে যায় ইয়ুর্গেন ক্লপের শিষ্যরা। আসরে তুলে নেয় নিজেদের প্রথম জয়।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Oct 2019, 08:56 PM
Updated : 2 Oct 2019, 09:38 PM

‘ই’ গ্রুপে ৭ গোলের রোমাঞ্চকর ম্যাচে ৪-৩ গোলে জিতেছে গত আসরের চ্যাম্পিয়নরা। নিজেদের প্রথম ম্যাচে নাপোলির বিপক্ষে ২-০ গোলে হেরেছিল তারা।

লিভারপুলের হয়ে জোড়া গোল করেন মোহামেদ সালাহ। একটি করে গোল করেন সাদিও মানে ও অ্যান্ড্রু রবার্টসন। অস্ট্রিয়ার দলটির হয়ে জালের দেখা পান হি-চান হওয়াং, তাকুমি মিনামিনো ও আর্লিং হলান্ড।

আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে শুরু থেকে জমে ওঠা ম্যাচে বারবার দুই দলের রক্ষণকে দিতে হয় পরীক্ষা। এর মধ্যে নবম মিনিটে লিভারপুলকে এগিয়ে নেন মানে।

মাঝমাঠে সাইড লাইনে বল পেয়ে তিনি কাট করে ভেতরে ঢুকে সঙ্গে লেগে থাকা ডিফেন্ডারকে এড়িয়ে বল বাড়ান রবের্তো ফিরমিনোকে। ব্রাজিল ফরোয়ার্ডের কাছ থেকে ফিরতি বল পেয়ে গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে জাল খুঁজে নেন সেনেগালের ফরোয়ার্ড মানে।

২৫তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে লিভারপুল। দুই ডিফেন্ডারের দারুণ বোঝাপড়ার ফসল এই গোল। জর্ডান হেন্ডারসনের কাছ থেকে বল পেয়ে নিচু ক্রসে রবার্টসনকে খুঁজে পান রাইট ব্যাক ট্রেন্ট অ্যালেকজান্ডার-আর্নল্ড। বাকিটা সারেন স্কটিশ লেফট ব্যাক রবার্টসন।

৩০তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ হাতছাড়া করেন সালাহ। একটুর জন্য শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি এই স্ট্রাইকার। পরের মিনিটে মিনামিনোর বুলেট গতির শট কর্নারের বিনিময়ে বাঁচিয়ে লিভারপুলের ত্রাতা আদ্রিয়ান।

৩৬তম মিনিটে গোলের দেখা পেয়ে যান সালাহ। মানের ক্রসে ফিরমিনোর হেড কোনোমতে ঠেকান সালসবুর্কের গোলরক্ষক। ফিরতি বলে সালাহর বুলেট গতির শট তার গ্লাভস ছুঁয়ে জড়ায় জালে।

তিন মিনিট পর হওয়াংয়ের নৈপুণ্যে ব্যবধান কমায় সালসবুর্ক। এনোক মউয়েপুর কাছ থেকে বল পেয়ে লিভারপুলের দুই ডিফেন্ডারকে এক ঝটকায় বিভ্রান্ত করে কোনাকুনি শটে জাল খুঁজে নেন দক্ষিণ কোরিয়ান ফরোয়ার্ড।

৪৯তম মিনিটে সাদামাটা ব্যাকপাস ক্লিয়ার করতে গিয়ে তালগোল পাকান আদ্রিয়ান। ছুটে আসা সালসবুর্ক ফরোয়ার্ড প্যাস্টনের গোড়ালিতে লেগে একটুর জন্য বল যায়নি জালে।

দ্বিতীয়ার্ধে লিভারপুলের রক্ষণে প্রচণ্ড চাপ তৈরি করে সালসবুর্ক। ৫৫তম মিনিটে কোনোমতে বেঁচে যায় স্বাগতিকরা। মিনামিনোর ক্রসে ঠিকানা খুঁজে পাননি হওয়াং। পরের মিনিটে ব্যবধান আরও কমায় অস্ট্রিয়ার দলটি। হওয়াংয়ের দারুণ ক্রসে চমৎকার ভলিতে বল জালে পাঠান অরক্ষিত জাপানিজ ফরোয়ার্ড মিনামিনো। 

৬০তম মিনিটে ম্যাচে সমতা ফেরায় সালসবুর্ক। বদলি নামার তিন মিনিটের মধ্যে গোল পেয়ে যান চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আগের ম্যাচে হ্যাটট্রিক করা আর্লিং হলান্ড। দারুণ স্কয়ার পাসে মূল কাজটা করেন মিনামিনো। অরক্ষিত স্ট্রাইকার হলান্ডের স্রেফ একটা টোকা দিতে হয়েছে।

পাগলাটে দ্বিতীয়ার্ধে নাটকীয়তা তখনও বাকি। বিরতির আগে ও পরে ২০ মিনিটের মধ্যে ৩ গোল হজম করা লিভারপুল এগিয়ে যায় সফরকারীদের ভুলে। একজন বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে পেয়ে যান ফাবিনিয়ো। তার পাস পেয়ে ফিরমিনো ফ্লিকে বল বাড়ান সালাহকে। সঙ্গে লেগে থাকা খেলোয়াড়দের পেছনে ফেলে বাকিটা সারেন মিশরের এই স্ট্রাইকার।

চার মিনিট পর ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ হাতছাড়া করেন মানে। অ্যালেক্সজান্ডার-আর্নল্ডের কর্নারে স্রেফ মাথা ছোঁয়াতে পারলেই গোল পেয়ে যেতেন তিনি। কিন্তু বলের নাগাল পাননি এই ফরোয়ার্ড।

বাকি সময়ে আর গোলের দেখা পায়নি কোনো দলই। আগের ম্যাচে হেঙ্ককে ৬-২ গোলে হারানো সালসবুর্ক পায় প্রথম হারের তেতো স্বাদ।

‘ই’ গ্রুপের অন্য ম্যাচে হেঙ্কের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করেছে নাপোলি। ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে তারা।