আক্রমণাত্মক লাওসের মুখোমুখি আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ

দুই দলই অপরাজিত থেকে বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৯ ইন্টারন্যাশনাল গোল্ড কাপের ফাইনালে উঠেছে। দুই দলের গত তিন ম্যাচ অবশ্য বলছে বাংলাদেশের চেয়ে লাওসের জয়গুলো ছিল বেশি দাপুটে। টুর্নামেন্ট জুড়ে আক্রমণাত্মক খেলা প্রতিপক্ষকে তাই সমীহ করছেন গোলাম রব্বানী ছোটন। তবে নিজ দলের শিরোপা জয়ের ব্যাপারেও আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ কোচ।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 May 2019, 01:09 PM
Updated : 2 May 2019, 01:11 PM

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আগামী শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় মুখোমুখি দুই দল। আগের দিনের সংবাদ সম্মেলনে দুই দলের কোচই শিরোপা জেতার প্রশ্নে দারুণ আশাবাদ বলে জানান।

গ্রুপ পর্বে মঙ্গোলিয়াকে ৫-০ গোলে হারানোর পর তাজিকিস্তানকে ৬-০ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছিল লাওস। সেমি-ফাইনালে দলটি কিরগিজস্তানকে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ৭-১ গোলে। গ্রুপে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ২-০ গোলে হারানো বাংলাদেশ পরের ম্যাচে কিরগিজস্তানকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছিল। সেরা চারে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে ৩-০ গোলে জিতেছিল স্বাগতিকরা।

লাওসের কোচ ভনমিসে সৌবৌয়াখামের ঘোষণা আক্রমণাত্মক খেলার ধারা ধরে রাখবে তার দল। তবে স্বাগতিকদের সমীহ করতেও ভোলেননি তিনি।

“সেমি-ফাইনালে খেলার প্রাথমিক লক্ষ্য পেরিয়ে এখন আমরা ফাইনালে। শেষ ম্যাচের জন্য দল শতভাগেরও বেশি প্রস্তুত। গত ম্যাচগুলোতে আমরা যেভাবে খেলেছি, ফাইনালেও একইভাবে আক্রমণাত্মক খেলতে চাই।”

“কোনো টুর্নামেন্টে স্বাগতিকদের বিপক্ষে খেলা কঠিন, সেটা আমরা জানি। কিন্তু এই মেয়েদের এএফসি ও অনান্য প্রতিযোগিতায় স্বাগতিকদের বিপক্ষে খেলার এবং জেতার অভিজ্ঞতা আছে।”

প্রতিযোগিতাটিকে স্মরণীয় করে রাখার প্রতিশ্রুতি সেই শুরুতেই দিয়েছিলেন রব্বানী। লাওসকে শক্তিশালী মেনে নিয়ে একই কথা আবারও বললেন বাংলাদেশ কোচ।

“ফাইনালে ওঠার প্রথম লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। এবার শিরোপা জিতে বঙ্গমাতা ফুটবলের প্রথম আসরটিকে স্মরণীয় করে রাখতে চাই।”

গত তিন ম্যাচে লাওস দিয়েছে ১৮ গোল; খেয়েছে মাত্র একটি। বাংলাদেশ ৭ গোল দিয়ে খেয়েছে একটি। সর্বোচ্চ গোলদাতা লাওসের ফরোয়ার্ড পি কেওতা একাই করেছেন ৮টি, যা বাংলাদেশ দলের দেওয়া মোট গোলের চেয়েও একটি বেশি। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতাও লাওসের ডিফেন্ডার সেসামোন ইনথাফোন (৪টি)।

শিউলি আজিম-আঁখি খাতুন-শামসুন্নাহার (সিনিয়র)-নার্গিস খাতুনে সাঁজানো রক্ষণভাগকে গত তিন ম্যাচে তেমন কোনো পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়নি। রুপনা চাকমাকেও গোলপোস্টের নিচে পার করতে হয়েছে অলস সময়। আঁখি-রুপনাদের জন্য ফাইনাল কঠিন পরীক্ষা হবে বলেই মনে করেন রব্বানী। প্রতিপক্ষের দুই ফরোয়ার্ড পি এবং আফাতসালা চ্যানথিথংয়ের জন্য আলাদা পরিকল্পনা আছে বলেও জানান তিনি।

“আগের তিন ম্যাচে আমাদের ডিফেন্ডারদের তেমন পরীক্ষা দিতে হয়নি। তাদের আসল পরীক্ষা হবে ফাইনালে। কেননা, লাওসের আক্রমণভাগ খুবই শক্তিশালী। তবে আশা করছি আমাদের ডিফেন্ডাররা তাল মিলিয়ে খেলতে সক্ষম হবে।”

“আমাদের মেয়েরা একই গতিতে ৯০ মিনিট খেলতে পারে; এটা তাদের বড় শক্তি। লাওসের পি ও আফাতসালা দুজনেই গোলমেশিন এবং বিপদজ্জনক খেলোয়াড়। তাদের আটকানোর জন্য বিশেষ পররিকল্পনা আছে আমাদের।”

গ্রুপ পর্বে কিরগিজস্তান ম্যাচে চোট পাওয়া দুই ফরোয়ার্ডের মধ্যে সিরাত জাহান স্বপ্নাকে পাচ্ছে না দল। দলের হয়ে সর্বোচ্চ দুই গোল করা কৃষ্ণা রানী সরকারের চোট সেরে ওঠায় তার শুরু একাদশে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন কোচ। লাওসকে আটকাতে মাঝমাঠে মনিকা চাকমা ও মারিয়া মান্ডার দিকেও বিশেষভাবে তাকিয়ে আছেন তিনি।

“স্বপ্নার ইনজুরি ভালো হয়নি। সে ফাইনালে খেলবে না। কৃষ্ণা সেরে উঠেছে। তার খেলার সম্ভাবনা আছে। মাঝমাঠে আমাদের মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে মনিকা ও মারিয়া। ফাইনালে দুজন যদি একসঙ্গে জ্বলে ওঠে, তাহলে দল অবশ্যই জিতবে।”

চেনা মাঠে, নিজেদের দর্শকের সামনে খেলার চাপ নিচ্ছেন না অধিনায়ক মিশরাত জাহান মৌসুমী, “নিজেদের মাঠে আমরা আগেও বয়সভিত্তিক অনান্য টুর্নামেন্টে খেলেছি। এটা কোনো চাপ নয়। আমাদের লক্ষ্য ঘরের ট্রফি যেন ঘরেই থাকে। ফাইনালে আমরা সেভাবেই খেলব।”