ফাইনালে লম্বা প্রতিপক্ষের ‘সেট পিস’ নিয়ে সতর্ক বাংলাদেশ

গ্রুপ পর্বে ফিলিস্তিনের করা তিন গোলের মধ্যে দুটি এসেছে হেড থেকে। গোল দুটি করেছেন দলটির ৬ ফুট ২ ইঞ্চি লম্বা দুই খেলোয়াড় আব্দুল্লাতিফ আলবাহাদারি ও খালেদ সালেম। বাকি যারা আছেন তারাও লম্বা গড়নের। ফাইনালে সেট-পিস পরিস্থিতি নিয়ে তাই চিন্তিত জেমি ডে। তবে অধিনায়ক জামাল ভূইয়ার চাওয়া, নির্ভার থেকে তার সতীর্থরা মেলে ধরুক নিজেদের সেরাটা।

মোহাম্মদ জুবায়েরমোহাম্মদ জুবায়েরকক্সবাজার থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Oct 2018, 12:15 PM
Updated : 9 Oct 2018, 12:15 PM

কক্সবাজারের বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে আগামী বুধবার বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপের দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে মুখোমুখি হবে দুই দল। দুই জয়ে ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেরা চারে উঠে এসেছে ফিলিস্তিন। একটি করে জয়, হারে ‘বি’ গ্রুপের রানার্সআপ হওয়া বাংলাদেশের সামনে ২০১৫ সালের পর এ প্রতিযোগিতার ফাইনালে ওঠার আরেকটি সুযোগ।

তাজিকিস্তানকে ২-০ গোলে হারিয়ে গ্রুপ পর্ব শুরু করা ম্যাচে ফিলিস্তিন দ্বিতীয় গোলটি পেয়েছিল ডিফেন্ডার আব্দুল্লাতিফের নিখুঁত হেডে। রক্ষণাত্মক খেলা নেপালের বিপক্ষে ১-০ গোলে জেতা ম্যাচে একমাত্র গোলটি হেডে করেছিলেন ফরোয়ার্ড খাদেম সালেম।

রক্ষণভাগে থাকা তপু বর্মন, বিশ্বনাথ ঘোষ, ওয়ালী ফয়সাল, টুটুল হোসেন বাদশা, সুশান্ত ত্রিপুরা, রহমত মিয়ার মধ্যে সবচেয়ে লম্বা বাদশা; ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি। তপু লম্বায় ৫ ফুট সাড়ে ৯ ইঞ্চি। গ্রুপ পর্বে লাওসকে হারানো ম্যাচে সেট পিস পরিস্থিতিতে প্রতিপক্ষকে সুযোগ নিতে দেয়নি রক্ষণভাগ। ফিলিপিন্সের কাছে ১-০ গোলে হেরে যাওয়া ম্যাচে তপুর ভুল ছাড়া বাকিটা সময় রক্ষণভাগ তটস্থ থেকে সামলেছে সব আক্রমণ। কিন্তু শক্তিশালী ফিলিস্তিনের বিপক্ষে ম্যাচে বিশেষ করে সেট পিস আটকানো কঠিন হবে বলে মানছেন বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে। শিষ্যদের তাই প্রতিপক্ষের লম্বা খেলোয়াড়দেরকে সেট পিসের সময় কড়া পাহারায় রাখার নির্দেশনা দিচ্ছেন তিনি।

“আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর এ পর্যন্ত সেট পিসে আমরা (ডিফেন্ডাররা) ভালো করেছি। তবে ফিলিস্তিন ম্যাচ এটা কঠিন হবে। কেননা তাদের দলে কয়েকজন লম্বা খেলোয়াড় আছে, যারা সেট পিসের সুযোগ কাজে লাগাতে পারদর্শী।”

“তাই এ ধরনের পরিস্থিতিতে ওদের কড়া পাহারায় রাখাটা নিশ্চিত করতে হবে আমাদের। চ্যালেঞ্জ করার ক্ষেত্রে আমাদের আগ্রাসী হতে হবে। ছেলেরা যদি সেটা করতে পারে, তাহলে এর বেশি কিছু আমি তাদের কাছে চাইব না। এ পর্যন্ত যেহেতু আমরা সেট পিসে ভালো করেছি, আশা করি আমরা সেটার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারব।”

অধিনায়ক জামাল ভূইয়াও চিন্তিত প্রতিপক্ষের লম্বা খেলোয়াড়দের নিয়ে। সতীর্থদের প্রতি তার আহ্বান ‘ছোট ছোট কৌশল’ কাজে লাগিয়ে সেট পিস পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার। অবশ্য ছোট ছোট কৌশলগুলোর প্রশ্নে মুখে ছিপি তার।

“ওদের লম্বা খেলোয়াড়দের বিপক্ষে আমাদের আগ্রাসী হতে হবে। ওরা তাজিকিস্তান ও নেপালের বিপক্ষে হেডে গোল করেছে। যেহেতু ফিলিস্তিনের খেলোয়াড়রা লম্বা, ওরা এ দিকটায় ভালো। তাই আমাদেরকে সেট পিস পরিস্থিতিতে বাঁচতে হলে এবং ওদেরকে হেড করা থেকে বিরত রাখতে ছোট ছোট সব কৌশল কাজে লাগাতে হবে।”

ফিফার র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ৯৩ ধাপ এগিয়ে ফিলিস্তিন। শক্তিশালী এই প্রতিপক্ষকে বাংলাদেশ কখনও হারাতে পারেনি। এ পর্যন্ত তিন দেখায় ফিলিস্তিনের জয় ২টি। ২০০৬ এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে একটি ম্যাচ ১-১ ড্র হয়েছিল। সব দিক থেকে এগিয়ে থাকা প্রতিপক্ষের বিপক্ষে নির্ভার থেকে সেরাটা দেওয়ার পরিকল্পনা অধিনায়ক জামালের।

“এটা আমাদের জন্য একটা বড় ম্যাচ। অবশ্যই ফিলিস্তিন ফেভারিট কিন্তু ম্যাচটা আমাদের মাঠে; আমরা সেরাটা দিব। সবাই জানে আমার আন্ডারডগ এবং যখন আপনি আন্ডারডগ হবেন তখন আপনার ওপর কোনো চাপ নেই। তাই আমরা নির্ভার থেকে খেলব।”

ফিলিপিন্সের কাছে গ্রুপ পর্বে হেরে যাওয়া ম্যাচে গোলের একাধিক সুযোগ নষ্ট করেন ফরোয়ার্ডরা। সেরা চারের লড়াইয়ে ফরোয়ার্ডরা সুযোগ নষ্ট করবে বলে বিশ্বাস কোচ জেমির।

“ছেলেরা ম্যাচের জন্য প্রস্তুত। জিততে হলে আমাদের গোল করা প্রয়োজন। আশা করি আমরা আগামীকাল সেটা করতে পারব। আমরা জানি ম্যাচটা কঠিন হবে। গত দুইটা আমরা আমরা ভালো খেলেছি। ছেলেদের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে এবং সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।”