ফিলিস্তিন ম্যাচে ‘লোকাল হিরো’ হতে চান সবুজ-ইব্রাহিমরা

বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপে সিলেটের গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশকে একমাত্র জয় এনে দেওয়ার নায়ক সিলেটেরই ছেলে বিপলু আহমেদ। সেমি-ফাইনালে পর্বে তাই ‘লোকাল হিরো’ হতে উন্মুখ হয়ে আছেন কক্সবাজারেরই খেলোয়াড় তৌহিদুল আলম সবুজ, মোহাম্মদ ইব্রাহিমরা।

মোহাম্মদ জুবায়েরমোহাম্মদ জুবায়েরকক্সবাজার থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Oct 2018, 02:59 PM
Updated : 8 Oct 2018, 02:59 PM

কক্সবাজারের বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে আগামী বুধবার বেলা আড়াইটায় দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে মুখোমুখি হবে ফিলিস্তিন ও বাংলাদেশ। ফিলিস্তিনিরা ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আছে ৯৩ ধাপ। প্রতিপক্ষকে শক্তিশালী মেনে নিজেদের মাঠে, বন্ধু-বান্ধব, পরিবার-পরিজন, চেনা দর্শকের সামনে খেলতে নামা সবুজ-ইব্রাহিমরা মুখিয়ে আছেন সেরা মেলে ধরতে; দলকে জয় এনে দিতে।

বর্তমান জাতীয় দলের ফুটবলারদের মধ্যে চার জন কক্সবাজারের। সবুজ, ইব্রাহিম ছাড়াও আছেন ডিফেন্ডার সুশান্ত ত্রিপুরা এবং গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। ১০ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতাসমপন্ন এই জেলা স্টেডিয়াম তাই হাতের তালুর মতো চেনা তাদের।

প্রিমিয়ার লিগের খেলার কারণে এখন ঢাকার মাঠেই সময় কাটে সবুজ-ইব্রাহিমদের। কিন্তু জেলা স্টেডিয়ামের আলো-বাতাস-মাঠকে ভোলেননি তারা। স্থানীয় পর্যায়ের দলগুলোর মধ্যে প্রীতি ম্যাচ থাকলে এখনও ডাক পড়ে তাদের; ছুটে এসে সাড়াও দেন। ২০১০ সালে মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের পর এই প্রথম রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ম্যাচ হচ্ছে। ছেলেদের আন্তর্জাতিক ম্যাচ অবশ্য এই প্রথম। তাই আলো ছড়াতে উন্মুখ হয়ে আছেন ২৮ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড সবুজ।

“মাঠে বন্ধু-বান্ধব, পরিবারের লোকজন আসবে। এটা আমার জন্য চাপ নয়; আরও বেশি অনুপ্রেরণার। চাপ না নিয়ে নিজের সেরাটা দেওয়া চেষ্টা করব। আমি যদি গোল না করতে পারি কিন্তু দল জেতে তাহলে আমি খুশি হব। আমার গোলে দল জিতলে আরও বেশি খুশি হব। বিষয়গুলো আমি এভাবেই ভাবি। ফরোয়ার্ড হিসেবে আমাকে গোল করতে হবে ঠিক আছে কিন্তু আমাকেই গোল করতে হবে এভাবে ভাবি না।”

সবুজের সুরে সুর মেলালেন ইব্রাহিম। জানালেন লাওস ম্যাচে বিপলুর মতো এবার ফিলিস্তিন ম্যাচে গোল করে ‘লোকাল হিরো’ হতে চান তিনি।

“খেলার জন্য মুখিয়ে আছি। বন্ধু-বান্ধব-আত্মীয়-স্বজন মাঠে আসবে। যতটুকু সুযোগ পাই, সেটা কাজে লাগিয়ে আমরা ঢাকায় ফাইনাল খেলতে চাই। সিলেটে বিপলু নায়ক হয়েছে; এখানে আমি হতে চাই। আমি দেশের মানুষকে, কক্সবাজারবাসীকে হতাশ করতে চাই না।”

প্রতিপক্ষ হিসেবে লাওসের তুলনায় ফিলিস্তিন অনেক শক্তিশালী। তাজিকিস্তান ও নেপালকে হারিয়ে ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে সেরা চারে উঠে এসেছে তারা।  তবে সবুজ ফিলিপিন্সের কাছে ১-০ গোলে হেরে যাওয়া ম্যাচ থেকে অনুপ্রেরণা নিচ্ছেন। দেখছেন জয়ের স্বপ্ন।

“আমি বিশ্বাস করি, শেষ ম্যাচে আমরা দুই-তিনটা সুযোগ পাওয়ার পরও গোল করতে পারিনি। ভাগ্য পাশে পেলে আমরাই ২-১ গোলে জিততাম। ফিলিপিন্স ম্যাচের পর আমাদের সবার আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। ওই ম্যাচে হয়ত আপনারা ভেবেছিলেন আমরা বড় ব্যবধানে হারব। কিন্তু আমরা ১-০ গোলে হেরেছি ভাগ্যকে পাশে না পাওয়ায়। যদি ফিলিস্তিনের বিপক্ষে ফিলিপিন্স ম্যাচের মতো খেলতে পারি আর ভাগ্যকে একটু পাশে পাই, তাহলে আমরা জিততে পারব।”

“ফিলিস্তিনের খেলোয়াড়রা লম্বা হওয়ায় আমাদের সমস্যা হবে না। পেশাদার সব দলেরই এগুলো নিয়ে পরিকল্পনা থাকে; আমাদেরও আছে। যদি ওরা লম্বা হওয়ায় আমাদের এয়ারে খেলতে অসুবিধা হয়, তাহলে আমরা গ্রাউন্ডে খেলার চেষ্টা করব।”

২১ বছর বয়সী মিডফিল্ডার ইব্রাহিমও ফিলিস্তিনকে শক্তিশালী মেনে জানালেন অঘটন ঘটানোর আশাবাদ।

“ফিলিস্তিন শক্তিশালী কিন্তু যে কোনো সময় ফুটবলে অঘটন ঘটতে পারে। ফুটবলে অসম্ভব বলে কিছু নেই।”