আগামী রোববার থাইল্যান্ডের চোনবুরিতে শুরু হবে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ। বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ সোমবার অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে।
বাংলাদেশের ‘বি’ গ্রুপে থাকা অন্য তিন দলের মধ্যে উত্তর কোরিয়া অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের দুইবারের চ্যাম্পিয়ন। জাপান একবারের সেরা। অস্ট্রেলিয়া মেয়েদের ফুটবলে এশিয়ায় র্যাঙ্কিং শীর্ষে।
থাইল্যান্ডের পথে রওনা দেওয়ার আগের দিন বৃহস্পতিবার ফুটবল ফেডারেশনের সংবাদ সম্মেলনে কোচ তাই গ্রুপের বাস্তবতা তুলে ধরলেন।
“উত্তর কোরিয়ার মেয়েরা বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতাগুলোর চ্যাম্পিয়ন। জাপানের জাতীয় মহিলা দল হচ্ছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। অস্ট্রেলিয়ার র্যাঙ্কিং ষষ্ঠ। তাদের সঙ্গে আমরা প্রথম খেলতে যাচ্ছি। তাদের সঙ্গে আমাদের বাস্তবতা বুঝতে হবে।...তবে আমরা সর্বোচ্চটুকু দিয়ে, নিজেদের উজাড় করে দিয়ে খেলব এবং তাদের বুঝিয়ে দেব, বাংলাদেশের ফুটবল কতদূর এগিয়েছে।”
“সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে আমাদের লক্ষ্য ছিল ভারতের গ্রুপে রানার্সআপ হব। কিন্তু ওদের নিজেদের জোনে আটকে রেখে আমরা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। আর ফাইনালে আমরা দর্শকদের ভালো ফুটবল উপহার দিয়ে রানার্সআপ হয়েছি। থাইল্যান্ডে আমাদের প্রথম লক্ষ্য প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল খেলা; প্রতিপক্ষের সঙ্গে সমান তালে খেলা।”
সে অর্থে বড় স্বপ্ন না দেখলেও লড়াই করার অনুপ্রেরণা ছোটন নিচ্ছেন আঞ্চলিক বাছাই থেকেও। পাঁচ প্রতিপক্ষকে হারিয়ে ‘সি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে মূলপর্বের টিকেট পায় বাংলাদেশ। বাছাইয়ে ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কিরগিজস্তানের মতো শক্তিশালী দলকে হারায় ছোটনের শিষ্যরা।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে বাছাই পর্বের ওই সাফল্যের পর থেকে নিবিড় অনুশীলন করছে দল। শারীরিক, মানসিক প্রস্তুতির সঙ্গে সমানতালে চলছে টেকনিক্যাল-ট্যাকটিক্যাল অনুশীলন। চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়ে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতাও কৃষ্ণাদের হয়েছে মাঝের সময়টায়। দলের ওপর তাই ছোটনের আস্থার কমতি নেই।
“আমার বিশ্বাস এবং মেয়েরাও বিশ্বাস করে, যেহেতু তারা কঠোর পরিশ্রম করেছে, সেহেতু আমরা দেশবাসীকে ভালো কিছু উপহার দিতে পারি। হার-জিত থাকবেই কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, আমার মেয়েদের সবার জন্য কঠিন প্রতিপক্ষ হবে। কেননা, এই বিশ্বাসটা মেয়েরা অর্জন করেছে। ফিটনেস লেভেল, টেকনিক্যাল-ট্যাকটিক্যাল সবকিছুতেই মেয়েরা উন্নতি করেছে।”
শুধু কৌশলগতভাবেই নয়, শারীরিক সামর্থ্যের দিক থেকেও পিছিয়ে বাংলাদেশ। তবে কোচের বিশ্বাস লম্বা সময়ের প্রস্তুতিতে দুই দিক থেকেই এগিয়েছে তার দল।
“জাপান সাকাই একাডেমিতে গিয়ে আমরা কোরিয়ার জাতীয় দলের সঙ্গে, চীনে অলিম্পিক ভিলেজে অনুশীলন করেছি। তাদের যে সুবিধা…আমাদের চেয়ে তাদের শক্তি বেশি। কিন্তু এক বছর আগে আমার খেলোয়াড়দের শারীরিক গঠন আর এখনকার অবস্থা এক নয়। অনেক উন্নতি হয়েছে। আমি মনে করি যে, একেবারে কাছাকাছি না হলেও মোটামুটি তাদের কাছাকাছি চলে এসেছি।”
“সব বিভাগেই কাজ করেছি। এখানে ট্যাকটিক্যাল-টেকনিক্যাল, টিউটোরিয়াল ক্লাস, সবকিছুই করেছি। এই এক বছর মেয়েরা ফুটবল ছাড়া কিছুই করেনি।”
সব বাস্তবতা মেনে নিয়ে স্বপ্ন দেখার ইঙ্গিত ঠিকই দিলেন কোচ।
“আমরা আমাদের সর্বোচ্চ দিয়েই খেলব। ভালো খেলার চেষ্টা করব। স্বপ্ন তো মানুষের থাকেই। আমাদেরও স্বপ্ন আছে। আমরা আমাদের মতো চেষ্টা করব।”