আবাহনীকে উড়িয়ে ফাইনালে বসুন্ধরা কিংস

শিরোপা ধরে রাখার লড়াইয়ে আগামী সোমবার মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মুখোমুখি হবে অস্কার ব্রুসনের দল।

আক্রমণাত্মক শুরুর পর একটু একটু করে খেই হারাতে থাকল আবাহনী। দ্বিতীয়ার্ধে স্রেফ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল ‘আকাশি-নীল’ জার্সিধারীরা। বিরতির পর চেনা রূপে ফিরে, একের পর এক গোল উৎসব করে আবাহনীকে উড়িয়ে স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে উঠল বসুন্ধরা কিংস।

কিংস অ্যারেনায় শুক্রবার দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে ৪-০ গোলে জিতে অস্কার ব্রুসনের দল। একটি করে গোল করেন সোহেল রানা, মিগেল দামাশেনো, দোরিয়েলতন গোমেস নাসিমেন্তো ও রবসন দি সিলভা রবিনিয়ো।

দিনের প্রথম সেমি-ফাইনালে শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস অ্যান্ড সোসাইটিকে ১-০ গোলে হারায় মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব।

আগামী সোমবার শিরোপা ধরে রাখার লড়াইয়ে মোহামেডানের মুখোমুখি হবে কিংস।

এএফসি কাপের গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে যাওয়ার হতাশা নিয়ে মাঠে নামা কিংস শুরুতেই আগ্রাসী আবাহনীর চাপে কোণঠাসা। চতুর্থ মিনিটে মাঝমাঠে বিশ্বনাথ ঘোষের কাছ থেকে বল কেড়ে এক ছুটে বক্সে ঢুকে পড়েন ওয়াশিংতন দস সান্তোস। ব্রাজিলিয়ান এই ফরোয়ার্ডের শট দুরের পোস্ট ঘেঁষে বাইরে যায়।

অষ্টম মিনিটে পায়ের কারিকুরিতে বল বের করে নেন জোনাথন ফের্নান্দেস রেইস, তবে এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের নিচু শট আটকে কিংসের ত্রাতা গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ।

দুই মিনিট পর বক্সের বাইরে থেকে রবিনিয়োর শট লাফিয়ে আঙুলের ছোঁয়ায় বাইরে ঠেলে দেন গোলরক্ষক পাপ্পু হোসেন। আবাহনীর পোস্টে এটাই ছিল কিংসের প্রথম আক্রমণ।

আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে চলা ম্যাচের ষোড়শ মিনিটে এমেকা ওগবাহর থ্রু পাস ধরে কিংস ডিফেন্ডার ববুরবেককে পেছনে ফেলে বক্সে ঢুকে পড়েন ফের্নান্দেস। তবে তার কাছের পোস্টে নেওয়া জোরাল শট ফিস্ট করে ফেরান শ্রাবণ।

২১তম মিনিটে বড় বাঁচা বেঁচে যায় আবাহনী। মাঝমাঠ থেকে রিয়াদুল রাফির ব্যাক পাসের নাগাল আগুয়ান গোলরক্ষক পাপ্পু পাওয়ার আগেই পেয়ে যান শেখ মোরসালিন। জায়গা করে নিয়ে শট নেন তিনি, বলও ছুটছিল জালের দিকে, দৌড়ে গিয়ে গোললাইন থেকে ক্লিয়ার করেন ফের্নান্দেস।

এরপর আরও দুটি সেভ করে কিংসের জাল অক্ষত রাখেন শ্রাবণ। ২৫তম মিনিটে ওগবাহর বাঁকানো শটের পর ওয়ান-অন-ওয়ান পজিশনে ফের্নান্দেসের শটও ফেরান তিনি।

দ্বিতীয়ার্ধে বদলে যায় দৃশ্যপট। শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ফুটবলের পসরা মেলে এগিয়ে যায় কিংস। দামাশেনোকে বল বাড়িয়ে বক্সের দিকে ছোটেন সোহেল; সতীর্থের কাছ থেকে ফিরতি পাস পাওয়া এই মিডফিল্ডারের শট এক জনের গায়ে লেগে কিছুটা দিক পাল্টে জালে জড়ায়।

৫২তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে নেয় কিংস। এই গোলের কৃতিত্ব মূলত রাকিবের। বক্সে দুই ডিফেন্ডার কাটিয়ে কোনাকুণি শট নিয়েছিলেন এই ফরোয়ার্ড; দূরের পোস্টে থাকা দোরিয়েলতন স্রেফ টোকা দেওয়ার কাজটুকুই করেন।

৭৩তম মিনিটে মেহেদী হাসান রয়েলের শট বাইরের জাল কাঁপায়। একটু পর তাকে তুলে অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড নাবিব নেওয়াজ জীবনকে নামান আবাহনী কোচ আন্দ্রেয়াস ক্রুসিয়ানি।

চার মিনিট পর সাদউদ্দিনের দারুণ ক্রসে দামাশেনো হেডে লক্ষ্যভেদ করেন। ৮১তম মিনিটে আবাহনী গোলরক্ষককে একা পেয়েও দোরিয়েলতন ঠিকঠাক শট নিতে পারেননি।

রবিনিয়োর সফল স্পট কিকে ৮৮তম মিনিটে কার্যত ম্যাচ শেষ করে দেয় কিংস। বক্সের ভেতর এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডই ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টির বাঁশি বাজিয়েছিলেন রেফারি।