ফের ভিনিসিউসের গোল, গিলেরের ঝলক, ৭ পয়েন্টে এগিয়ে গেল রেয়াল

এক ম্যাচ পর লা লিগায় জয়ে ফিরল কার্লো আনচেলত্তির দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 March 2024, 07:33 PM
Updated : 10 March 2024, 07:33 PM

ম্যাচজুড়ে আক্রমণের ঝড় বইয়ে দিল রেয়াল মাদ্রিদ। একের পর এক সেভ করলেন সেল্তা ভিগোর গোলরক্ষক। এর মাঝেই জালের দেখা পেলেন ভিনিসিউস জুনিয়র। ভাগ্যের ছোঁয়ায় মিলল আরও দুটি গোল। আর বদলি নেমে চমৎকার গোল করলেন আর্দা গিলের। ঘরের মাঠে জিতে লিগ শিরোপা পুনরুদ্ধারের অভিযানে ৭ পয়েন্টে এগিয়ে গেল কার্লো আনচেলত্তির দল।

সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে রোববার ৭৩ হাজার দর্শকের সামনে লা লিগার ম্যাচটি ৪-০ গোলে জিতেছে রেয়াল।

প্রথমার্ধে ভিনিসিউস দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর ৭৯তম মিনিটে আত্মঘাতী গোল করেন সেল্তার গোলরক্ষক ভিসেন্তে গুয়াইতা। অবশ্য সেখানে তার দায় ছিল সামান্যই। কর্নারে রেয়ালের আন্টোনিও রুডিগারের হেডে বল ক্রসবারের নিচের দিকে লাগার পর গুয়াইতার পিঠে লেগে জালে জড়ায়। ৮৮তম মিনিটে আরেকটি আত্মঘাতী গোল করেন সেল্তার ডিফেন্ডার কার্লো দোমিঙ্গেস।

পরের মিনিটে ভিনিসিউসের বদলি নেমে যোগ করা সময়ে গোল করেন গিলের। দুর্দান্ত ড্রিবলিং দক্ষতার জন্য ‘তুরস্কের মেসি’ নামে পরিচিত এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারের রেয়ালের হয়ে প্রথম গোল এটি।

এক ম্যাচ পর লিগে জয়ে ফিরল স্পেনের সফলতম দলটি। গত রাউন্ডে ভালেন্সিয়ার মাঠে ২-২ ড্র করেছিল তারা। সব মিলিয়ে সবশেষ ছয় রাউন্ডে তাদের তৃতীয় জয় এটি, বাকি তিনটি ড্র।

ম্যাচের শুরু থেকে আক্রমণ শাণায় রেয়াল। প্রথম সাত মিনিটে চারটি কর্নার পায় তারা। এর মধ্যে তৃতীয়টিতে এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গার জোরাল হেডে বল এক হাতে ক্রসবারের ওপর দিয়ে পাঠান গুয়াইতা। তার আগে তৃতীয় মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে ফরাসি মিডফিল্ডারের একটি শটও ঠেকান তিনি।

২১তম মিনিটে গোলের দেখা পায় রেয়াল। গোলের উৎসও সেই কর্নার। রুডিগারের হেড গুয়াইতা পা দিয়ে ঠেকানোর পর কাছ থেকে ভিনিসিউসের প্রথম শটও আটকে দেন তিনি, ফিরতি শটে বল জালে পাঠান ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।

গত রাউন্ডে ভালেন্সিয়ার বিপক্ষে জোড়া গোল করেছিলেন ভিনিসিউস। চলতি আসরে ১৯ ম্যাচে তার গোল হলো ১০টি।

৩৫তম মিনিটে বক্সের বাঁ দিক থেকে রদ্রিগোর শট পা দিয়ে ঠেকান গুয়াইতা। দুই মিনিট পর বক্সের বাইরে থেকে কামাভিঙ্গার আরেকটি শট ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন ৩৭ বছর বয়সী এই স্প্যানিশ গোলরক্ষক।

প্রথমার্ধে প্রায় ৭১ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য রেয়াল শট নেয় ১২টি, যার ৮টি ছিল লক্ষ্যে। এই সময়ে সেল্তার ৭ শটের একটি লক্ষ্যে ছিল, ইয়াগো আসপাসের সেই শট ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক আন্দ্রি লুনিন।

৫৫তম মিনিটে বল নিয়ে এগিয়ে যাওয়া ভিনিসিউসকে পেছন থেকে জার্সি টেনে ধরে ফেলে দেন অস্কার মিনগেসা। উঠে দাঁড়িয়ে সেল্তার এই ডিফেন্ডারকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন ভিনিসিউস। দুজনকেই হলুদ কার্ড দেখান রেফারি।

৫৮তম মিনিটে ভিনিসিউসের পাসে ব্রাহিম দিয়াসের শট অনায়াসে ঠেকান গুয়াইতা। ৬৬তম মিনিটে বক্সে ভালো পজিশনে থেকে গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে হতাশ করেন রদ্রিগো। দুই মিনিট পর বক্সের বাইরে থেকে ভিনিসিউসের শট ঠেকাতেও বেগ পেতে হয়নি গুয়াইতাকে।

৭৪তম মিনিটে প্রথম পরিবর্তন আনেন আনচেলত্তি। রদ্রিগোর জায়গায় নামানো হয় স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড হোসেলুকে।

এরপর ওই দুটি আত্মঘাতী গোল, যেখানে গুয়াইতার মতো দোমিঙ্গেসেরও খুব বেশি দায় ছিল না। বাঁ দিক থেকে ভিনিসিউসের একটি ক্রস সামনে এগিয়ে ক্লিয়ার করার চেষ্টায় হাত ছোঁয়াতে পারেননি গুয়াইতা। তার পেছনেই থাকা দোমিঙ্গেসের পায়ে লেগে বল যায় জালে।

যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে দারুণ ফিনিংশে শেষ গোলটি করেন গিলের। দানি সেবাইয়োসের পাস বক্সে পেয়ে এগিয়ে আসা গোলরক্ষককে কাটিয়ে দুরূহ কোণ থেকে ডান পায়ের শটে ঠিকানা খুঁজে নেন তিনি।

তুরস্কের সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে লা লিগার ম্যাচে গোল করলেন গিলের, ১৯ বছর ১৪ দিন। 

২৮ ম্যাচে ২১ জয় ও ৬ ড্রয়ে ৬৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে রেয়াল। সমান ম্যাচে ৬২ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে জিরোনা। তাদের চেয়ে ১ পয়েন্ট কম নিয়ে তিনে আছে বার্সেলোনা।

২৪ পয়েন্ট নিয়ে ১৭ নম্বরে আছে সেল্তা।