অপহরণের ঘটনায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে দায়ী করছে দেলোয়ারের পরিবার।
Published : 16 Apr 2024, 06:15 PM
নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী এক ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর মারধরের ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার রাতে উপজেলার শেরকোল থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে নাটোর সদর থানার এসআই জামাল উদ্দিন জানান।
তিনি বলেন, সোমবার বিকালে নাটোর জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে থেকে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় একদল লোক। কয়েক ঘণ্টা পর তাকে বাড়ির সামনে ফেলে যায় তারা।
নাটোরের পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, মারধরের শিকার দেলোয়ারকে উদ্ধারের পর প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতালে এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় দেলোয়ারের ভাই মো. মজিবর রহমান রাতেই অজ্ঞাতপরিচয় ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা করেন নাটোর সদর থানায়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- সিংড়ার হারোবাড়িয়া এলাকার মো. জাহেদুল ইসলামের ছেলে মো. নাজমুল হক বাবু (৩২) এবং কৃঞ্চপুর এলাকার মো. আব্দুস সামাদের ছেলের মো. সুমন আহমেদ (৩০)।
পুলিশ বলছে, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ভিডিও বিশ্লেষণ করে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তার এবং অপহরণে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত আছে।
এ ঘটনার জন্য চেয়ারম্যান পদের আরেক প্রার্থী লুৎফুল হাবীব রুবেল ও তার সমর্থকদের দায়ী করেছে দেলোয়ার হোসেনের পরিবার।
লুৎফুল হাবীব সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সম্প্রতি তিনি শেরকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে লুৎফুল হাবীব বলেন, “দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণ ও মারধরের বিষয়ে আমি কিছু জানি না।”
ঘটনাস্থলের একটি সিসিটিভি ভিডিওতে দেখা যায়, বিকাল ৪টার দিকে নাটোর জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে থেকে দেলোয়ার হোসেনকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মাইক্রোবাসে তুলছেন ১৫ থেকে ২০ জন লোক। সেখানে আরও তিনটি গাড়ি ও দুটি মোটরসাইকেল ছিল তখন।
দেলোয়ারের বড় ভাই সিংড়া কলম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক বলেন, “দেলোয়ার সোমবার সকালে অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে নাটোরের স্টেশন বাজারে যায়। পরে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে মনোনয়নপত্রের প্রতিলিপি জমা দিতে যায়।
“সেখান থেকে লুৎফুল হাবীব রুবেলের লোকজন দেলোয়ারকে তুলে নিয়ে যান। পরে ব্যাপক মারধর করে সন্ধ্যার দিকে বাড়ির সামনে তাকে একটি গাড়ি ফেলে দিয়ে যায়।”
উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে এমদাদুল হকের অভিযোগ।
নাটোর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রওশন আরা বলেন, দেলোয়ার মাথায় আঘাত পেয়েছেন।
“এখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
নাটোরের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, “ঘটনাটি জানার পর পরই ভিকটিমকে উদ্ধার করে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে অপরাধীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”
ঘটনাটি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন নাটোর জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঞা।
নাটোর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ শেখ মঙ্গলবার বিকালে সাংবাদিকদের বলেন, “দেলোয়ার হোসেনের আবেদন আগেই এসেছে। কোনো প্রার্থীকেই নির্বাচন অফিসে আসতে হয় না। বিস্তারিত জেনে জানাতে পারব।”