রংপুরে কালবৈশাখীতে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত, ফসলের ক্ষতি

বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২ মিলিমিটার; আর বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৪৫ কিলোমিটার।

রংপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 May 2023, 12:36 PM
Updated : 16 May 2023, 12:36 PM

রংপুরে হটাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে প্রাণহানির কোনো ঘটনা না ঘটলেও শিশুসহ বেশ কয়েকজন আহতের খবর পাওয়া গেছে।

সোমবার রাতের ঝড়ে সদর, পীরগাছা ও কাউনিয়া উপজেলার অন্তত চার থেকে পাঁচটি গ্রামের আম, ভুট্টা, গম, ধানসহ উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কথা জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

রংপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারী মোস্তাফিজার রহমান জানান, রাত সাড়ে ১০টার পর থেমে থেমে ঝোড়ো বাতাস বইতে থাকে। এতে দুই উপজেলায় অন্তত অর্ধশত ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।

তবে তাৎক্ষণিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেনি কৃষি বিভাগ ও আবহাওয়া অধিদপ্তর।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চিলমন, জগিটারী, পাঙ্গাটারী, সাহেবগঞ্জসহ পীরগাছার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের প্রতিপাল, বগুড়া পাড়া, পরাণ, শালমারা, ব্রাক্ষ্মণীকুণ্ডা বাজার, ছাওলা ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রামের ওপর দিয়ে কালবৈশাখী ঝড় বয়ে গেছে।

এতে গাছপালা উপড়ে বাড়িঘর ভেঙে গেছে। কারো কারো ঘরের চাল উড়ে গেছে। ধসে পড়েছে বাড়ির দেয়াল। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ধান, ভুট্টা, আম ও কলাগাছের।

এদিকে ঝড়ের তাণ্ডবে কাউনিয়া-রংপুর সড়কে বেশ কিছু গাছ ভেঙে পড়ায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে রাতেই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গাছ সরিয়ে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

পীরগাছা ও কাউনিয়ার বাসিন্দারা জানায়, ঝড়ে গাছপাড়া উপড়ে শিশুসহ বেশ কয়েকজনকে আহত হয়েছে। তাদের স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়েছে। অনেকের মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়েছেন।

তাম্বুলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বজলুর রশীদ বলেন, “ঝড় থেমে যাওয়ার পর থেকে বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে ঘুরে দেখছি। দুই শতাধিক বাড়িঘরের ক্ষতি হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে যতটা সম্ভব সহযোগিতা করা হবে।”

পীরগাছা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা নাজমুল হক সুমন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করছি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা করা হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।

“ঝড়ে টিনের চাল উড়ে গেছে। গাছপালা উপড়ে ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সহায়তার জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানো হবে।”

আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সোমবার রাতে ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৪৫ কিলোমিটার। তবে ঝড়টির স্থায়িত্ব ছিল খুবি কম।

আগামী ৩ দিনের মধ্যে রংপুর বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছেন মোস্তাফিজার রহমান।