ভাইয়ের দায়ের করা মামলায় হারুনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
Published : 19 Feb 2024, 04:31 PM
গোপালগঞ্জে পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে এক নারী ও তার এসএসসি পরীক্ষার্থী মেয়েকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে মামলা হয়েছে।
সোমবার নিহত নারীর স্বামী টুকু মিনা বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন বলে ওসি মোহাম্মদ আনিচুর রহমান জানান।
আসামিরা হলেন- মামলার বাদি টুকু মিনার বড় ভাই গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের হারুন মিনা (৬০), তার স্ত্রী দুলু বেগম (৫৫) ও মেয়ে ময়না খানম (১৮)।
রোববার সন্ধ্যায় দেশি অস্ত্র (কাতরা) দিয়ে ভাবি বিউটি বেগম ও ভাতিজি লামিয়াকে কুপিয়ে হত্যা করেন হারুন। তারা একই বাড়িতে থাকতেন। এ ঘটনায় লামিয়ার ছোট বোন অন্তরাও আহত হয়েছে।
ঘটনার পর জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে পুলিশ। এরই মধ্যে রোববার গভীর রাতে কাশিয়ানী উপজেলার ফুকরা গ্রাম থেকে গোপালগঞ্জ থানা পুলিশ হারুনকে আটক করে।
ওসি বলেন, হত্যাকাণ্ডের পরপরই হারুন পালিয়ে যান। পরে কাশিয়ানী উপজেলার ফুকরা এলাকায় মধুমতি নদী পার হয়ে পালানোর চেষ্টা করছিলেন তিনি। গোপন খবরে অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাকে আটক এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রটি উদ্ধার করে।
“তাকে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে; তিনি মা ও মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় হারুনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”
নিহত ১৬ বছর বয়সী লামিয়া খালিয়া ইউনাইটেড একাডেমি থেকে ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। তার মা ৩৮ বছর বয়সী বিউটি বেগম গৃহিণী।
এ ঘটনায় ১২ বছর বয়সী অন্তরাকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে পুলিশ জানায়, বড় ভাই হারুন মিনার সঙ্গে মেজ ভাই টুকু মিনার বাড়ির জমির সীমানা নিয়ে বিরোধ চলছিল। রোববার সন্ধ্যায় টুকুর মেয়ে লামিয়া বাড়ির সীমানায় দাঁড়িয়ে মোবাইল ফোনে কথা বলছিল। তখন বড় চাচা হারুন তাকে ওই স্থান থেকে সরে যেতে বলে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
শব্দ পেয়ে লামিয়ার মা বিউটি ও ছোট বোন অন্তরা ঘটনাস্থলে যান। এক পর্যায়ে হারুন উত্তেজিত হয়ে দেশি অস্ত্র (কাতরা) দিয়ে লামিয়া ও তার মা বিউটিকে কোপালে তারা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। অন্তরা ঠেকাতে গেলে তার হাতে কোপ লাগে। প্রচণ্ড রক্তক্ষরণে মা-মেয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
ময়নাতদন্ত শেষে মা-মেয়ের লাশ দুপুরে পরিবারের সদস্যদের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে ওসি আনিচুর জানান।