লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার সরকারের হাটে বাল্যবিয়ের অভিযোগে ঘটক, বর ও বরের বাবাকে কান ধরিয়ে উঠবস কারানোর একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা রাকিবুল হাসান আশরাফী সোহেলের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী বরের বাবা সোমবার পাটগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
রাকিবুল হাসান আশরাফী সোহেল পাটগ্রাম উপজেলার সরকারের হাটের প্রয়াত নুরুল হক আশরাফীর ছেলে ও উপজেলার জোংড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাদীর ছেলের সঙ্গে একই উপজেলার সরকারেরহাট এলাকার একজনের মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়। শুক্রবার বিয়ের দিন কনে অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় পরবর্তিতে প্রাপ্ত বয়স্ক হলে তাদের বিয়ে হবে মর্মে দুই পরিবারের মধ্যে আলোচনা হয়।
এদিকে, বাল্যবিয়ে হচ্ছে এমন খবর শুনে রাকিবুল হাসান ওই কনের বাড়ি গিয়ে বরসহ সবাইকে আটক করেন। বাল্যবিয়ে না দেওয়া ও যৌতুক নেবেন না বলে বরপক্ষকে শপথ করান।
“এ সময় বর, বরের বাবা ও ঘটককে কান ধরিয়ে উঠবস করান সোহেল এবং সেই দৃশ্য তিনি নিজের ফোনে ভিডিও করে রাখেন।”
এরপর তাদের কান করিয়ে উঠবস করার ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে সোহেল ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
পরের দিন শনিবার বাদী সোহেলকে ৩০ হাজার টাকা দেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করে বলেন, “কিন্তু টাকা নেওয়ার পরেও তিনি সেই ভিডিওটি নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। পরে নেট দুনিয়ায় মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।”
এ বিষয়ে রাকিবুল হাসান আশরাফী সোহেল বলেন, ছেলে ও মেয়ে দুজনের বয়স কম। বাল্য বিয়ে থেকে রক্ষার জন্য বর ও কনে পক্ষের মুরব্বীদের সংগে কথা বলে বরপক্ষের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেওয়ার কথা বলার সাথে সাথেই তারা ভয়ে নিজেরাই কান ধরে উঠবস করতে থাকেন।
“তখন আমি তাদের ভিডিও করেছি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিয়েছি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়াটি আমার ঠিক হয়নি।”
পাটগ্রাম থানার ওসি ওমর ফারুক বলেন, “ঘটনার বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হক সুমন বলেন, “শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে সোহেল নামের একজন আমাকে মোবাইল করেছিল বাল্য বিয়ের বিষয়ে। তাকে থানায় আইনের আশ্রয় নিতে বলেছি। এরপর আর কথা হয়নি।
“তিনি যদি বর, বরের বাবা ও ঘটককে কান ধরে উঠবস করান এবং সেটি ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিয়ে থাকেন সেটি ঠিক করেননি।”