রাজশাহীতে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিএমডিএর দুই কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বিএমডিএর চেয়ারম্যান আক্তার জাহান বলেন, “সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে ভিডিও ফুটেজ দেখে দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। এর পর দুই জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।”
বরখাস্তকৃতরা হলেন- প্রতিষ্ঠানটির ভাণ্ডার রক্ষক জীবন ও পরিচালকের গাড়িচালক আব্দুস সবুর।
সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর আমবাগান এলাকায় বিএমডিএর কার্যালয়ে হামলায় এটিএন নিউজের রিপোর্টার বুলবুল হাবিব ও ক্যামেরাপারসন রুবেল ইসলাম আহত হন।
পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
হামলার শিকার বুলবুল হাবিব বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক সকাল ৮টায় অফিস শুরু হওয়ার কথা। সেই নির্দেশনা কতটুকু কার্যকর হয়েছে সেটির খবর নিতে সকালে তারা বিএমডিএ কার্যালয়ে যান। সকাল ৮টা ২০ মিনিটের দিকে বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালক (ইডি) আব্দুর রশিদ অফিসে প্রবেশ করেন। প্রবেশের পরপরই সাংবাদিক দেখে তিনি উত্তেজিত হয়ে যান।
বুলবুল আরও বলেন, “এক পর্যায়ে তিনি দ্বিতীয় তলায় তার দপ্তরে ওঠে যান। কিছুক্ষণ পর আট থেকে ১০ জন লোক আমাদের ঘিরে ধরে এলোপাতাড়ি হামলা চালিয়ে ক্যামেরা ও এটিএন নিউজের বুম ভেঙে ফেলে। তাদের হামলায় ক্যামেরাপারসন রুবেল গুরুতর আহত হন।”
“রুবেলকে তারা শক্ত কোনো কিছু দিয়ে জোরে আঘাত করে। বর্তমানে তার অবস্থা গুরুতর। এমন অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।”
এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হবে বলে জানান বুলবুল হাবিব।
এদিকে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হামলার শিকার হওয়ার প্রতিবাদে রাজশাহীতে কর্মরত সাংবাদিকরা বিএমডিএ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন।
পরে বেলা ৩টার দিকে সাংবাদিক নেতাদের নিয়ে নিজ কার্যালয়ে বৈঠক করেন বিএমডিএর চেয়ারম্যান আক্তার জাহান।
বৈঠকে দুই জনকে সাময়িক বরখাস্ত করার কথা জানিয়ে আক্তার জাহান বলেন, “ঘটনার তদন্তে কমিটি করা হবে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর এর সঙ্গে আরও কারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, “প্রাথমিকভাবে আমরা দুই জনের বরখাস্তের দাবি করেছিলাম; তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে। আরও পাঁচ জনের বিষয়ে আমরা জানিয়েছি। তাদের মঙ্গলবারের মধ্যে বদলির দাবি জানিয়েছি। কর্তৃপক্ষ আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। তাদের আশ্বাসে আমাদের আন্দোলন স্থগিত করি।”