টুঙ্গিপাড়ার জনসভা শেষে প্রধানমন্ত্রী দুপুরে কোটালীপাড়া পৌরসভার শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজ মাঠের জনসভায় যোগ দেবেন।
Published : 30 Dec 2023, 09:26 AM
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের আসন গোপালগঞ্জ-৩ এর মানুষের কাছে নৌকায় ভোট চাইবেন। সেজন্য টুঙ্গিপাড়ায় তার জনসভাস্থলে মানুষের ঢল নেমেছে।
টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনে নৌকার প্রচারে শনিবার দুই উপজেলাতেই নির্বাচনি জনসভায় অংশ নেবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী।
এর মধ্যে বেলা ১১টায় টুঙ্গিপাড়ার শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজ মাঠে জনসভায় যোগ দিয়ে নির্বাচনি এলাকার ভোটারদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখবেন তিনি।
তবে সকাল থেকেই মিছিলসহ নেতাকর্মী, সমর্থক ও সাধারণ মানুষ কলেজ মাঠে আসতে শুরু করেন। সকাল সোয়া ৯টার মধ্যেই জনসভাস্থল পরিণত হয় লোকারণ্যে।
স্লোগানে স্লোগানে সরগরম মাঠে তারা অপেক্ষা করছেন বঙ্গবন্ধুর কন্যার কথা শুনতে। এর মধ্যেও খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আরও মানুষ জড়ো হচ্ছেন জনসভার মাঠে।
এর আগে শুক্রবার বরিশালের জনসভা শেষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সড়কপথে বরিশাল থেকে টুঙ্গিপাড়া আসেন। রাতে তিনি নিজ বাড়িতে অবস্থান করেন।
প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে টানানো হয়েছে ব্যানার; আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
টুঙ্গিপাড়ার জনসভা শেষে প্রধানমন্ত্রী দুপুরে কোটালীপাড়া পৌরসভার শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজ মাঠের জনসভায় যোগ দেবেন।
প্রধানমন্ত্রীর এসব জনসভাকে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মাঝে।
নির্বাচনি জনসভার সকল প্রস্তুতি সম্পন্নের কথা জানিয়ে শুক্রবার টু্ঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ বলেছিলেন, “টুঙ্গিপাড়া সরকারি শেখ মুজিবুর রহমান কলেজ মাঠে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটবে বলে আমরা ধারণা করছি। ঘরের মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এক নজর দেখতে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে সাধারণ মানুষের মাঝে।”
কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ বলেছিলেন, “প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে কোটালীপাড়া নতুনরূপে সেজেছে। নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। তাকে এক নজর দেখতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন কোটালীপাড়াবাসী।”
টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা এর আগে ১৯৯৬ সালেও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ আছে তার। তা হলে সবমিলিয়ে তিনি পাঁচবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হবেন।
১৯৮১ সালে থেকে প্রায় ৪২ বছর ধরে দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের দলীয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করলে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
এরপর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার বিজয়ী হলে ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তৃতীয়বার শপথ নেন তিনি।
সবশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়ে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন শেখ হাসিনা।
এছাড়া বাংলাদেশের তিনটি জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন শেখ হাসিনা।
১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে শেখ হাসিনা তিনটি সংসদীয় আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই সময় তিনি বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ওই নির্বাচনের পরই দেশ থেকে সামরিক আইন প্রত্যাহার করে সাংবিধানিক প্রক্রিয়া শুরু হয়। ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা।
এছাড়া ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
পুরানো খবর
প্রধানমন্ত্রীর জনসভা: টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়ায় মঞ্চ তৈরি, সাজ সাজ রব