ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের আট মাস পর ৭৫ সদস্যের নির্বাহী কমিটি এবং ২০ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটি অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।
সোমবার রাতে অনুমোদিত নির্বাহী কমিটিতে সহ-সভাপতি করা হয়েছে ১১ জনকে, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে তিনজন করে। কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সম্পাদক পর্যায়ে সদস্য হলেন ৩৯ জন এবং সদস্য করা হয়েছে ৩৬ জনকে।
গত ১২ মে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে সভাপতি হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি শামীম হক এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সাবেক তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক শাহ্ মো. ইশতিয়াক আরিফের নাম ঘোষণা করা হয়।
তখন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বলেছিলেন, “এই দুই পদে যারা মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন আগামী কমিটিতে তাদের সবাইকে স্থান দেওয়া হবে।”
তবে ঘোষিত কমিটিতে দেখা যাচ্ছে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী সবাইকে নতুন কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
জেলা সম্মেলনের সময় সভাপতি পদে ১০ জন এবং সাধারণ সম্পাদকের পদে ২১ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন।
তাদের মধ্যে সভাপতি পদে প্রার্থী ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি শামসুল হক ওরফে ভোলা মাস্টার। নতুন কমিটিতে কোনো পদেই তাকে রাখা হয়নি। এ ছাড়া জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জিয়াউল হাসান ওরফে মিঠু সম্মেলনের সময় সাধারণ সম্পাদক মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন, তাকেও সদ্য ঘোষিত কমিটির কোনো পদে রাখা হয়নি।
ঘোষিত কমিটির আরেকটি বৈশিষ্ট হচ্ছে, গত কমিটিতে ফরিদপুর জেলায় যারা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন তাদের নাম ছিল। সে হিসেবে জেলা কমিটির সদস্য ছিলেন ফরিদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ও ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী জাফরউল্লা।
সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী কিছুদিন পূর্বে প্রয়াত হয়েছেন। অপরদিকে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য করা হয়েছে ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমানকে।
কিন্তু বর্তমান জেলা কমিটিতে কাজী জাফরউল্লাহ এবং আব্দুর রহমানকে সদস্য রাখা হয়নি।
পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক বলেন, কেন্দ্রে জেলা আওয়ামী লীগের দুটি কমিটি জমা পড়েছিল। দলের কেন্দ্রীয় সভাপতিমণ্ডলীতে ফরিদপুরের দুই সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ ও আব্দুর রহমানের সাথে আলাপ আলোচনা করে দুই কমিটি সমন্বয় করে বর্তমান কমিটি করা হয়েছে।
কেন্দ্র থেকে ঘোষণা দেওয়া এই কমিটি সর্বজনস্বীকৃত হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, “এই কমিটি নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করে আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া ও দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ের পথ সুগম করা সহজ হবে।”
এই প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামিম হক বলেন, ঘোষিত পূর্ণাঙ্গ এই কমিটিতে দলের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের আশার প্রতিফলন ঘটেছে। যেখানে দল আরও শক্তিশালী হবে কোনো সন্দেহ নেই।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই দলীয় শৃঙ্খলার মধ্য থেকে আগামী দিনের সব কর্মসূচি পালন করব। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যারা যাবে এবং শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ করবে, অবশ্যই তাদের বিষয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।