‘অবৈধ সম্পদ’: কুমিল্লার সাবেক জেল সুপার ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা

এ দম্পতির বিরুদ্ধে দুই কোটি ২১ লাখ টাকার অতিরিক্ত সম্পত্তি অর্জনের তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে দুদক।

কুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Oct 2023, 04:28 PM
Updated : 18 Oct 2023, 04:28 PM

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের সাবেক জ্যেষ্ঠ জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। 

বুধবার মামলাটি দায়ের করেন দুদকের কুমিল্লার সহকারী পরিচালক পাপন কুমার সাহা। 

আসামিরা হলেন- টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার থানার এলাচিপুর এলাকার পারেশ আলী মিয়ার ছেলে শাহজাহান আহমেদ (৫৮) ও তার স্ত্রী খন্দকার নুরুন নাহার লোটাস (৫২)। 

শাহজাহান বর্তমানে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ এর জ্যেষ্ঠ জেল সুপার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, “শাহজাহান ১৯৮৭ সালে বস্ত্র অধিদপ্তরের ড্রাফটসম্যান পদে যোগদান করেন। পরে তিনি ১৯৯১ সালে ডেপুটি জেলার পদে আত্তীকৃত হন। শাহজাহান ১৯৯২ সালের ২০ জুন নুরুন নাহারকে বিয়ে করেন। তিনি পেশায় গৃহিণী। 

“জেল সুপার হিসেবে ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে কর্মরত ছিলেন শাহজাহান। চাকরিকালীন তার বৈধ সম্পদের চেয়ে দুই কোটি ২১ লাখ সাত হাজার ২৯৫ টাকার অতিরিক্ত সম্পত্তি নজরে আসে দুদকের। পরে তা অনুসন্ধানে নামে সংস্থাটি। 

“এর মধ্যে শাহজাহান ও তার স্ত্রীর নামে রাজধানীর খিলগাঁও, বাড্ডা এবং টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে গ্রামের বাড়িতে ফ্ল্যাট, প্লট ও বিভিন্ন সম্পদ খোঁজ পায় দুদক। যার কোনো হিসাব দিতে পারেননি এ দম্পতি।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, “অনুসন্ধানে শাহজাহানের নিজ নামে স্থাবর-অস্থাবরসহ এক কোটি ৩০ লাখ ১৯ হাজার ২৬৩ টাকার সম্পদের মালিকানা পায় দুদক। এ সম্পদ অর্জনের বিপরীতে তার মোট আয় পাওয়া যায় ৫৮ লাখ ১০ হাজার ৪১ টাকা। তবে ৭২ লাখ নয় হাজার ২২২ টাকার সম্পদের বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। 

“অপরদিকে, অনুসন্ধান চলাকালে নুরুন নাহারের নামে অর্জিত এক কোটি ৪৮ লাখ ৯৮ হাজার ৭৩ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। দুদকের কাছে প্রথমে ব্যবসার কথা উল্লেখ করা হলেও ব্যবসার কোনো কাগজপত্র প্রদর্শন করতে পারেননি তারা। 

“এ ছাড়া দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন তিনি ব্যবসা থেকে কোনো উপার্জন করেননি। এসব সম্পদ স্বামীর টাকায় অর্জন করেছেন তিনি।” 

বুধবার সন্ধ্যায় দুদক কুমিল্লার উপ-পরিচালক মো. ফজলুল হক বলেন, “সব সম্পদের হিসাব দিতে পারেননি শাহজাহান। তিনি অবৈধভাবে এই সম্পদ আয় করেছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। যে কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। 

“মামলাটি গ্রহণ করেছেন দুদকের সহকারী পরিচালক মাসুম আলী। মামলার নথি আদালতে পাঠানো হয়েছে। আইনি কার্যক্রম চলমান রয়েছে।” 

দুদকের মামলার বিষয়ে জানতে শাহজাহানের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তার নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।