স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের এ কমিটিকে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
Published : 04 Mar 2024, 10:54 PM
সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে শিক্ষকের পিস্তলের গুলিতে এক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনা তদন্তে কমিটি করেছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর।
সোমবার স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।
কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. মো. মহিউদ্দিন মাতুব্বর এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন।
কমিটিকে আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
সোমবার দুপুরের দিকে কলেজের শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক রায়হান শরীফের পিস্তলের গুলিতে আরাফাত রহমান তমাল নামে এক শিক্ষার্থী আহত হয়।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হান্নান মিয়া জানান, আহত তমালের পায়ে গুলি লেগেছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি অষ্টম ব্যাচের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
এ সময় কানের পাশ দিয়ে গুলি যাওয়ায় আরেক ছাত্রীও অসুস্থ হয়েছেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তার নাম জানা যায়নি। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মেডিকেল কলেজের ছাত্রী আফিয়া সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের শিক্ষক রায়হান শরীফ ক্লাসে মৌখিক পরীক্ষা নিচ্ছিলেন। এ সময় তিনি আমাদের উদ্দেশে বলেন, তোমাদের কারও কি পোষা পাখি আছে? আমার একটা পোষা পাখি আছে।
“এই বলে তিনি তার সঙ্গে থাকা একটি কালো ব্যাগ থেকে পিস্তল বের করে আমাদের দেখিয়ে বলেন, এটা হচ্ছে আমার পোষাপাখি।”
আফিয়া বলেন, “এ সময় হঠাৎ করেই পিস্তল থেকে গুলি বের হয়ে যায়। একজনের পায়ে লেগেছে, আর একজনের কানের পাশ দিয়ে গেছে।”
এরপরই ক্লাসরুমে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা হুড়োহুড়ি শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা শিক্ষক রায়হান শরীফকে আটকে রাখেন। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে শিক্ষক রায়হান শরীফকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হান্নান মিয়া বলেন, ওই শিক্ষকের কাছে থাকা পিস্তলটি জব্দ করা হয়েছে।
“পিস্তলটি ওই শিক্ষকের নিবন্ধিত কিনা এখনও যাচাই করা যায়নি। শিক্ষক আমাদের হেফাজতে আছেন। আমরা শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করছি। শিক্ষকের শাস্তির আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।”
কলেজের অধ্যক্ষ আমিরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, “ওই শিক্ষকের মেজাজ উগ্র। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রায়ই তিনি রূঢ় আচরণ করেন। ক্লাস ও ক্যাম্পাসে পিস্তল নিয়ে আসায় শিক্ষার্থীরা প্রায়ই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন।
“আমিও তার বদলির জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বেশ কয়েকটি চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।”
অধ্যক্ষ আমিরুল বলেন, “আজকে অসময়ে ক্লাসে আসতে শিক্ষার্থীদের বাধ্য করার বিতণ্ডার মধ্যে শিক্ষার্থীকে গুলির ঘটনায় আমি সত্যিই হতবাক হয়েছি।
“আমি অফিসের কাজে ঢাকায় এসেছি। সিরাজগঞ্জ ফিরে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবারও অধিদপ্তরে লিখব।”
‘উগ্র মেজাজি’ রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যত অভিযোগ
সিরাজগঞ্জে মেডিকেল কলেজে শিক্ষকের পিস্তলের গুলিতে শিক্ষার্থী আহত