সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের প্রভাষক রায়হান শরীফের পিস্তলটি অবৈধ বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সোমবার বিকালে মৌখিক পরীক্ষা চলাকালে ওই পিস্তলের গুলিতে এক শিক্ষার্থী আহত হন। তার পায়ে গুলি লাগে। তারপরই শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। খবর পেয়ে পুলিশ এসে শিক্ষক রায়হান শরীফকে হেফাজতে নেয়; তার পিস্তলটিও জব্দ করা হয়েছে।
সন্ধ্যার পর আহত শিক্ষার্থী আরাফাত রহমান তমালের (২২) পায়ে অস্ত্রোপচার হয়েছে বলে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। তমাল কলেজের এমবিবিএস অষ্টম ব্যাচের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা শিক্ষককে আটকে রেখে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে বিপুল সংখ্যক র্যাব, থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ গিয়ে প্রায় ৩ ঘণ্টার চেষ্টায় পরিস্থিতি শান্ত করে। কলেজে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক রায়হান শরীফ সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে এবং শহরের দত্তবাড়ি মহল্লার বাসিন্দা।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হান্নান মিয়া তখন জানিয়েছিলেন, রায়হান শরীফের ৭.৫ বোরের পিস্তলটি নিবন্ধিত কি-না সেটা তারা যাচাই করতে পারেননি।
তবে রাতে জেলা পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা যাচাই করে দেখেছি রায়হান শরীফের পিস্তলটির কোনো নিবন্ধন নেই। সেটি অবৈধ।”
এ ব্যাপারে পুলিশ বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা করবে বলেও জানান পুলিশ সুপার।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, এ ছাড়া আহত আরাফাত রহমান তমালের বাবা বাদী হয়ে আরেকটি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এ ঘটনার পর শিক্ষক রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নানা অভিযোগ করেছেন।
কলেজের অধ্যক্ষ আমিরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, “ওই শিক্ষকের মেজাজ উগ্র। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রায়ই তিনি রূঢ় আচরণ করেন। ক্লাস ও ক্যাম্পাসে পিস্তল নিয়ে আসায় শিক্ষার্থীরা প্রায়ই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন।
“আমিও তার বদলির জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বেশ কয়েকটি চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।”
অধ্যক্ষ বলেন, “আজকে অসময়ে ক্লাসে আসতে শিক্ষার্থীদের বাধ্য করার বিতণ্ডার মধ্যে শিক্ষার্থীকে গুলির ঘটনায় আমি সত্যিই হতবাক হয়েছি। আমি অফিসের কাজে ঢাকায় এসেছি। সিরাজগঞ্জ ফিরে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবারও অধিদপ্তরে লেখব।”