কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি নির্বাচনে প্রায় সবাই বিনাভোটে জয়ী

এ নির্বাচন বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত সাদা দল বয়কট করেছে।

কুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Feb 2024, 07:00 PM
Updated : 19 Feb 2024, 07:00 PM

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে ১৫টি পদের মধ্যে ১৪টিতেই প্রার্থীরা বিনাভোটে বিজয়ী হয়েছেন। একমাত্র সাধারণ সম্পাদক পদে ভোট হয়েছে।  

সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোটগ্রহণ চলে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত। ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক রেজাউল করিম। 

ফলাফল অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষকদের প্যানেল নীল দলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেদি হাসান বিজয়ী হয়েছেন। তিনি অপর প্রতিদ্বন্দ্বী লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জিয়া উদ্দিনকে ৮৯ ভোটে পরাজিত করেন। 

বিনাভোটে যারা বিজয়ী হয়েছেন তারাও বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষকদের প্যানেলের প্রার্থী ছিলেন। এ কমিটি এক বছর দায়িত্ব পালন করবে। 

নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মাহাবুব ও আবু বকর ছিদ্দিক জানান, নির্বাচনে ২৬৬ জন ভোটারের মধ্যে ১৭৪ জন ভোট দিয়েছেন। এরমধ্যে তিনটি ভোট বাতিল করা হয়েছে। 

এ নির্বাচন বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত সাদা দল বয়কট করেছে। 

বিজয়ীরা হলেন- সভাপতি পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক মো. আবু তাহের, সহসভাপতি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন, সহসভাপতি অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের অধ্যাপক মো. তোফায়েল হোসেন মজুমদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহমুদুল হাছান, কোষাধ্যক্ষ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মুর্শেদ রায়হান, সাহিত্য সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান। 

কার্যকরী সদস্যরা হলেন- অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ্র দেব, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মো. শামিমুল ইসলাম, পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র নন্দী, নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আইনুল হক, রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. শাহাদাৎ হোসেন, অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক স্বর্ণা মজুমদার এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান। 

প্রধান নির্বাচন কমিশনার রেজাউল করিম বলেন, “একটি প্যানেল থেকে আমরা ১৫ জনের নাম পেয়েছি এবং আরেকজন স্বতন্ত্র থেকে সাধারণ সম্পাদক পদে দাঁড়িয়েছেন।

এজন্য শুধুমাত্র সাধারণ সম্পাদক পদে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বী পেয়েছি। তাই সাধারণ সম্পাদক পদে ভোট হয়েছে। বাকি পদগুলোতে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় প্রাথমিকভাবে ১৪ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।” 

শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বঙ্গবন্ধু পরিষদের (নীল দল) শিক্ষকদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে ২০২২ সালের ১ ডিসেম্বর আয়োজিত শিক্ষক সমিতির নির্বাচন ভণ্ডুল হয়।

এরপর ২০২২ সালের ২২ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষকদের পক্ষে ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী ওমর সিদ্দিকী ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাসেনা বেগম শিক্ষক সমিতি-২০২২ এর কার্যনির্বাহী পরিষদের সভাপতি বরাবর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচনটি আয়োজনের আবেদন করেছিলেন।

তৎকালীন কমিটি নির্বাচন আয়োজন না করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন করার যোগ্যতা হারিয়েছিল। 

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতিতে এ যাবৎকালে দায়িত্বে থাকা নেতৃবৃন্দ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের সমন্বয়ে একটি সাধারণ সভা ডাকেন শিক্ষক সমিতির সর্বশেষ কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক।

সভা শেষে নির্দিষ্ট সময় নিয়ে শিক্ষক সমিতির পক্ষে-বিপক্ষে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি চালানো হয়। সেই গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে দুইশ জনের অধিক শিক্ষক, শিক্ষক সমিতি গঠনের পক্ষে স্বাক্ষর দিলে ৭ ফেব্রুয়ারি একটি সভা হয়। এরপর ৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়।