ঘূর্ণিঝড় দানা মোকাবেলায় ৭৫৮টি মাধ্যমিক এবং এক হাজার ৫৯০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
Published : 23 Oct 2024, 10:23 PM
ঘূর্ণিঝড় দানা মোকাবেলায় বরিশালে ৫৪১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখার কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। এ ছাড়া ৭৫৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, কলেজ এবং এক হাজার ৫৯০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যায় নিজ কার্যালয়ে সভা কক্ষে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় এ তথ্য জানান বরিশাল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন।
দুর্যোগ মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতির কথা জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, “আশ্রয়কেন্দ্রের প্রতিটিতে ৫০০ জন করে উঠতে পারবেন। আমাদের হাতে এ মুহূর্তে ত্রাণ কার্য পরিচালনার জন্য ১২ লাখ ২৬ হাজার টাকার পাশাপাশি শিশু খাদ্যের জন্য পাঁচ লাখ এবং গো খাদ্যের জন্য পাঁচ লাখ টাকা আছে।
“এ ছাড়া ত্রাণ কার্য পরিচালনার জন্য ৫৬৯ মেট্রিকটন চালও মজুদ রয়েছে। সেইসঙ্গে শুকনো খাবার ও পানি বিশুদ্ধ করণ ট্যাবলেট সরবরাহ করা হচ্ছে।”
দেলোয়ার হোসেন বলেন, “আমরা আশা করি সাধারণ মানুষ যথাসময়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাবেন এবং দুর্যোগকালীন সময়ে কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সাগরে বা নদীতে মাছ শিকারে বের হবে না।
“এ মুহূর্তে পানি উন্নয়ন বোর্ড, আবহাওয়া অধিদপ্তর, সিপিপি, রেডক্রিসেন্ট, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, আনসার, শিক্ষা দপ্তর, স্বাস্থ্য দপ্তর, বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে সভা করেছি। তারা আমাদের তাদের প্রস্তুতির বিষয়ে জানিয়েছেন।
“বিদ্যুৎ বিভাগ নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন। তারপরও দুর্যোগে কোনো সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হলে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে জেনারেটর, চার্জার লাইন, মোমবাতিসহ যাবতীয় সরঞ্জাম সেবা দপ্তরগুলোকে সংগ্রহে রাখতে বলা হয়েছে।”
যেকোনো পরিস্থিতিতে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি চিকিৎসাসেবা অব্যাহত রাখতে সংশ্লিষ্ট সবাই নিশ্চয়তা দিয়েছেন বলে জানান জেলা প্রশাসক।
তিনি বলেন, এ মুহূর্তে সেনাবাহিনী মাঠ পর্যায়ে রয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে তারাও সহযোগিতা করতে পারবেন।
বরিশাল সিভিল সার্জন মারিয়া হাসান জানান, বিগত দিনের ন্যায় এবারও জেলার ১০ উপজেলায় ইউনিয়ন পর্যায়ে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। যারা দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াবে। তবে হাসপাতালগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিশ্চিতের জন্য বলা হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ উপকূলের ৬০০ কিলোমিটারের মধ্যে চলে আসায় দেশের চার সমুদ্র বন্দরে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, বুধবার দুপুর ১২টায় ঘূর্ণিঝড় দানা চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০০ কিলোমিটার দক্ষিণ- দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে অবস্থান করছিল।
সে সময় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছিল।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলা হয়েছে।