হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আটজনকে আটক করেছে বলে মুকসুদপুর থানার ওসি মো. আবুবকর মিয়া জানিয়েছেন।
নিহত ঝিমি আক্তার (৪০) উপজেলার পাইকদিয়া গ্রামের নূর আলম মুন্সীর (৫০) স্ত্রী।
ঘটনার পর সোমবার মুকসুদপুর থানায় ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, নূর আলম তার প্রতিবেশী অসীম মোল্লার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ইরি চাষ করেন। ফসল তুলে তাকে আসল টাকার সঙ্গে সুদ হিসেবে ৫০ মণ ধান দেওয়ার কথা। কিন্তু ধান পাকার পর অতিবৃষ্টিতে ক্ষেতেই ডুবে নষ্ট হয়ে যায়। এতে নূর আলম নিস্ব হয়ে পড়েন। এ নিয়ে সম্প্রতি এক সালিশ বৈঠক হয়। আগামী ১৫ নভেম্বর টাকা পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি দেন নূর আলম। এরই মধ্যে রোববার রাত ১১টার দিকে অসীম মোল্লা ফোন করে নূর আলমকে ডাকেন। অসীম ১৫ নভেম্বরের আগেই সুদসহ টাকা পরিশোধের চাপ দিলে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে নূর আলমকে মারধরসহ কুপিয়ে আহত করেন অসীম ও তার লোকজন। ঝিমি স্বামীকে বাঁচাতে গেলে তাকেও কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করা হয়।
চিৎকার শুনে স্থানীয়রা গিয়ে তাদের উদ্ধার করে মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক ঝিমি আক্তারকে মৃত ঘোষণা করেন৷ আর নূর আলমকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
মুকসুদপুর হাসপাতালের চিকিৎসক নিলয় রঞ্জন বল্লভ বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই ঝিমি মারা যান। তার স্বামীর অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় রাতেই তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নূর আলমের প্রতিবেশী আকবর মজুমদার বলেন, “সুদের কারবারিরা দস্যু প্রকৃতির মানুষ । সালিশে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়। তার পরও নূর আলমকে বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল তারা। নূর আলম আমাকে বিষয়টি জানায়। তাকে নিয়ে আমি থানায় গিয়ে ওসি সাহেবকে অবহিত করি।”
ঘটনার পর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে৷ লাশ ময়না তদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
ওসি আবুবকর বলেন, পাওনা টাকা আদায়কে কেন্দ্র করে ঝিমি খুন হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য মিলেছে৷ এ ব্যাপারে ২৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। মারধরের পর রোববার রাতেই আটজনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে পুলিশ। মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।