তবে স্থানীয় কৃষি বিভাগের দাবি, উৎপাদন কম হলেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে।
জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাটে দেশের বৃহত্তম আমবাজারে অন্যান্য বছরের তুলনায় সরবরাহ প্রায় অর্ধেক বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। একই চিত্র চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের পুরাতন বাজার, ভোলাহাট ও গোমস্তাপুরের রহনপুর আম বাজারেও।
কানসাট ও জেলা শহরের পুরাতন বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত দুই বছর কোভিড মহামারীর কারণে বিধিনিষেধের মধ্যে বাজার বসলেও ক্রেতা কম ছিল। তাই সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও তাদের ব্যবসা মন্দা গেছে। কিন্তু এবারে বাজারে সরবরাহ কম হলেও ক্রেতা বেশি থাকায় দাম ভাল পাচ্ছেন তারা।
ব্যবসায়ীরা জানান, আমের মধ্যে গোপালভোগ থাকে অল্প সময়ের জন্য। এক সপ্তাহের মধ্যে এই আমটি শেষ হয়ে যায়। গতবার যে গোপালভোগ তারা ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা মণে বিক্রি করেন এবার তা বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুণের বেশি; ২৮০০ থেকে ৩২০০ টাকা দরে।
কানসাটসহ জেলার অন্যান্য বাজার এখন ছেয়ে গেছে ল্যাংড়া, ক্ষীরসাপাতি, ফজলি, আম্রপালি ও বিভিন্ন জাতের গুটি আমে। প্রতিমণ ল্যাংড়া বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার থেকে তিন হাজার ৫০০ টাকায়। প্রতিমণ ক্ষীরসাপাতির দাম ল্যাংড়ার চেয়ে বেশি, চার হাজার থেকে চার হাজার ২০০ টাকায়।
এসব আম গত বছর এর অর্ধেকেরও কম দামে বিক্রি হয় বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
কানসাট উপজেলার শ্যামপুর ও ধোবড়া গ্রাম থেকে কানসাট বাজারে আম বিক্রি করতে আসেন ইনসাদুল ইসলাম ও আলমগীর হোসেন।
তারা বলেন, গত দুই বছরে দাম নিয়ে হতাশ থাকলেও এবারে খুশি তারা। তাদের বক্তব্য, বাজারে সরবরাহ কম থাকলেও ক্রেতা সমাগম প্রচুর। তাই দামও পাওয়া যাচ্ছে।
জেলা শহরের মিস্ত্রিপাড়ার সুকুমার সাহা বলেন একই কথা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমবাগান রয়েছে। ৮৩ ভাগ গাছে মুকুল এসেছিল, কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়ায় ফলন কম হয়েছে।
“তবে লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। চলতি বছর জেলায় ৩ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিকটন আম উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলায় আম কিছুটা কম হলেও বরেন্দ্র অঞ্চলে অপেক্ষাকৃত বেশি হয়েছে। বিশেষ করে বড় গাছের তুলনায় অপেক্ষাকৃত ছোট গাছে আম বেশি হয়েছে।”
ফলন ও দাম নিয়ে চাষি ও ব্যবসায়ী উভয় শ্রেণি সন্তুষ্ট আছে বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।