শ্রীবরদী থানার ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের খোশালপুর পুটল গ্রামে ওই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
ওই গ্রামের মিন্টু মিয়ার স্ত্রী মনিরা বেগম (৪০), মনিরার মা শেফালী বেগম (৬০) ও মনিরার চাচা নূর মোহাম্মদ ওরফে মাহমুদ হাজী (৬৫) ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত হন।
মনিরার বাবা মনু মিয়া (৭৫), ভাই শাহাদাৎ হোসেন (৪০) এবং তাদের আত্মীয় বাচ্চুনী বেগমকে (৫২) গুরুতর আহত অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে শুক্রবার ভোর রাতে মিন্টু মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। শেরপুরের পুলিশ সুপার হাসান নাহিদ চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ হান্নান মিয়া, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নালিতাবাড়ী সার্কেল) আফরোজা নাজনীন ছাড়াও পিবিআই, সিআইডি ও র্যাবের কর্মকর্তারা রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ।
স্বজনরা জানান, প্রায় ১৭ বছার আগে মনু মিয়ার মেয়ে মনিরার সঙ্গে পাশের গেরামারা গ্রামের আব্দুল হাইয়ের ছেলে মিন্টু মিয়ার বিয়ে হয়। তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
মিন্টু মিয়া বেশ কিছুদিন ধরে বেকার থাকায় স্ত্রীর সঙ্গে তার প্রায়ই ঝগড়া হত। ওই কলহের জেরে গত রোজার শুরুতে বাপের বাড়ি চলে আসেন মনিরা। কিছুদিন পর মিন্টু তাকে ফিরিয়ে নিতে শ্বশুরবাড়ি গেলেও মনিরা যাননি।
মনিরার আত্মীয় এবং স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ বলছে, বৃহস্পতিবার রাতে বোরকা পরে মিন্টু তার শ্বশুরবাড়িতে যান এবং দা দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে স্ত্রীসহ ছয়জনকে আহত করে পালিয়ে যান।
পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে জামালপুরের বকশিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মারা যান মনিরা। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর তার মা ও চাচাও মারা যান।
নিহতদের মধ্যে দুইজনের লাশ বকশিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে, আর একজনের লাশ শ্রীবরদী থানায় নেওয়া হয়েছে বলে ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস জানান।
তিনি বলেন, মিন্টুকে শুক্রবার ভোর রাতে গ্রেপ্তার করার সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা এবং একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। যে বোরকা পরে তিনি শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলেন, সেটাও পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে।