রাঙামাটির দুর্গম পাহাড়ে গুলিতে ৩ মৃত্যুর খবর

রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার দুর্গম বড়থলি এলাকায় গুলিতে তিন গ্রামবাসী নিহতের খবর পাওয়া গেছে।

রাঙামাটি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 June 2022, 11:06 AM
Updated : 22 June 2022, 11:27 AM

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বড়থলি ইউনিয়নের সাইজান নতুন পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে বলে বড়থলি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির ইউনিয়ন সভাপতি আতুমং মারমা জানান।

বড়থলি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ইউপি সদস্য ওয়েইবার ত্রিপুরাও একই কথা জানান।  

তবে হত্যাকাণ্ডের কথা পুলিশ কিংবা অন্য কোনো আইনশৃংখলা বাহিনী নিশ্চিত করতে পারছে না। পুলিশ এ খবর শোনার কথা বললেও নিশ্চিত করতে পারেনি; স্থানটি দুর্গম হওয়ায় এ বিষয়ে জানাতে সময় লাগবে বলে জানানো হয়।

এদিকে, ‘কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ’ নামের একটি সংগঠনের ফেইসবুকে তিনজনকে হত্যার দায় স্বীকার করে তাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সশস্ত্র সংগঠন জেএলএ-এর সদস্য বলে দাবি করা হয়।   

স্থানীয় জেএসএস নেতা আতুমং মারমা সাংবাদিকদের বলন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ‘কুকিচীন পার্টি’ নামের একটি নতুন সশস্ত্র সংগঠনের কর্মীরা বড়থলি ইউনিয়নের সাইজান নতুন পাড়ায় এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ করলে ঘটনাস্থলে তিন জন নিহত হয়। বিষয়টি আইনশৃংখলা বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।

আতুমং মারমার ভাষ্য, হামলায় বৃষচন্দ্র ত্রিপুরা, সুভাষ ত্রিপুরা ও সুভাষের ছেলে ধনরা ত্রিপুরা নিহত হয়েছেন। এরা নিরীহ গ্রামবাসী।

ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১২ ঘণ্টার হাঁটা দূরত্বে বান্দরবানের রুমা উপজেলায় অবস্থান করে এ খবর জানিয়েছেন আতুমং মারমা।

তবে কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড সেই বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি তিনি।

বড়থলি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ইউপি সদস্য ওয়েইবার ত্রিপুরা জানান, নতুন গড়ে ওঠা ওই পাড়াতে [সাইজান নতুন পাড়া] মাত্র তিনটি পরিবার বসবাস করে। এলাকাটি খুবই দুর্গম।

তিনি এই ঘটনার জন্য ‘কুকিচীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট – কেএনএফকে দায়ী করছেন।

রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মাহমুদা বেগম বলেন, “বিষয়টি আমরাও শুনেছি। তবে দুর্গম এলাকা হওয়ায় সেখানে পৌঁছানো কঠিন এবং সময়সাপেক্ষ। তাই আমরা এখনও নিশ্চিত কিছু বলতে পারছি না।”

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য বিলাইছড়ি থানার ওসি আলমগীর হোসেনকে বেশ কয়েকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

বিলাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, “বড়থলির চেয়ারম্যান আমাকে বিষয়টি জানানোর পর আমি বিলাইছড়ি থানাকে জানিয়েছি। এলাকাটি এতই দুর্গম যে সেখানে বিলাইছড়ি থেকে তিন দিন, পাশ্ববর্তী রুমা উপজেলা থেকে যেতেও দুইদিন সময় লাগে। পুরো বিষয়টি রুমা জোনকে অবহিত করা হয়েছে, তারা বিষয়টি দেখছে।”

এদিকে, ‘কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ’ নামের একটি সংগঠন তাদের ফেইসবুক পেইজে এক বিজ্ঞপ্তিতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে।

সংগঠনটির ইনফরমেশন ডিপার্টমেন্টের দায়িত্ব পালনকারী হিসেবে দাবি করা এবং নিজেকে ‘লে. কর্নেল সলোমন’ হিসেবে পরিচয় দানকারী ওই ব্যক্তি ফেইসবুকে বিবৃতিতে বলেন, “কেএনএফ-এর স্পেশাল কমান্ডো ফোর্স হেড-হান্টার টিম সন্ত্রাসী জেএসএস'র সশস্ত্র বাহিনী জেএলএ-এর জাইজাম বেসমেন্ট ক্যাম্পে সফলভাবে হামলা চালিয়েছে। এতে জেএলএ বাহিনীর তিন জন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হয়। তবে আহত অবস্থায় ট্রেইনিসহ অন্যরা সবাই পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।”