যদিও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা বন্দরের উপ-পরিচালক খালেদ নেওয়াজ বলেছেন, যানজট পরিস্থিতি আজকের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
সোমবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দ বাজার পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় যাত্রীবাহী পরিবহন ও পণ্যবাহী ট্রাকের সারি রয়েছে।
এ ছাড়াও ঘাট থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরের সদর উপজেলার গোয়ালন্দ মোড় ছাড়িয়ে আরও দুই কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত রয়েছে পণ্যবাহী ট্রাক।
এদিকে ঘাটে বাসের যাত্রীদেরও প্রচুর চাপ রয়েছে। যারা ভেঙে ভেঙে আসছেন তাদেরকে বাসগুলো ঘাট থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে নামিয়ে দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা অটোরিকশা, মাহেন্দ্র, রিকশায় করে ঘাটে আসছেন।
ঘাটে ফেরি এলেই যাত্রীরা হুড়োহুড়ি করে উঠছেন। যাত্রীদের কারণে যানবাহন তেমন একটা উঠতে পারছে না। দু-একটি যাত্রীবাহী বাস ও যাত্রীদের নিয়েই অধিকাংশ ফেরি পাটুরিয়ায় উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে।
সাতক্ষীরা থেকে ছেড়ে আসা কিং ফিসার পরিবহনের যাত্রী মোছা. নাছিমা বেগম বেলা ১১টায় বলেন, “আমাদের খুবই কষ্ট হচ্ছে। রাত ১২টা থেকে ঘাটে আটকে আছি। আমরা তো মেয়েমানুষ, আমরা তো ছেলেদের মতো বাইরে হাঁটাহাঁটি করতে পারি না। কত সময় আমরা গাড়িতে বসে থাকতে পারি বলেন? দুই ঘণ্টা, তিন ঘণ্টা এর বেশি না।”
আরেক যাত্রী ইসরাত বলেন, “রাত থেকে ফেরির জন্য বসে আছি। এখন সোমবার সকাল ১০টা বাজলেও দুই কিলোমিটার দূরে জ্যামে বসে আছি। আরও তিন ঘণ্টাতেও ফেরিতে উঠতে পারব কি-না জানি না। ঈদ শেষে পরিবার নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছি, সঙ্গে শিশু বাচ্চা আছে। গরমে অস্থির হয়ে যাচ্ছে।”
গাজীপুরের একটি মাদরাসার শিক্ষার্থী সাহাদ সিদ্দিকি বলেন, “আমি খুলনা থেকে এসেছি। রাত ১টা থেকে ফেরি ঘাটে আটকে আছি। এখন সকাল সাড়ে ১০টা বাজলেও ফেরিতে উঠতে পারিনি। জ্যামে না থাকলে হয়তো অনেক আগেই গাজীপুর পৌঁছে যেতাম।
“আগামীকাল থেকে ক্লাস শুরু। ভেবেছিলাম একদিন বিশ্রাম নিতে পারব। কিন্তু সেটা হবে না। মানুষের ভোগান্তি কমাতে ঘাট সংশ্লিষ্টদের কিছু করা উচিত।”
বিআইডব্লিউটিসি মানিকগঞ্জের আরিচা বন্দরের উপ-পরিচালক মো. খালেক নেওয়াজ বলেন, যানবাহনের চাপ রয়েছে। ফলে যানবাহনগুলোকে দৌলতদিয়া প্রান্তে ফেরির জন্য অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।
“পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে এই নৌ-পথে ২১টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হলেও তাদের হিমসিম খেতে হচ্ছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, পরিস্থিতি আজকের মধ্যে সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে।”