মঙ্গলবার ভোরে কাপ্তাই হ্রদে ফুল ভাসিয়ে চাকমা ও মারমা জনগোষ্ঠীর লোকজন পালন করেছে এ উৎসবের প্রথম দিনের ‘ফুলবিজু’। এ সময় পুরনো বছরের সব গ্লানি ভুলে বর্ণিল আয়োজনে মেতে ওঠে পাহাড়িরা।
বৈসকু, সাংগ্রাই, বিজু, বিষু, বিহু, সাংক্রান্ত-পাহাড়ি জনপদের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বৈচিত্র্যের প্রকাশ ঘটে এই বর্ষবরণের উৎসবে।
সূর্যোদয়ের পরপরই রাঙামাটি শহরের বিভিন্ন স্থানে একাধিক সংগঠনের আয়োজনে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ভাসানো হয় বিভিন্ন ধরনের ফুল। মহামারীর কারণে দুবছর বন্ধ ছিল এ উৎসব। তাই ফুল ভাসানোর এবারের অনুষ্ঠান ঘিরে বাড়তি উচ্ছ্বাস ছিল তরুণ-তরুণীদের।
রাঙামাটি শহরের রাজবন বিহারের পূর্বপাশে সম্ভু ঘাটে আনুষ্ঠানিকভাবে ফুল ভাসানো অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ‘বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, বিষু, বিহু, সাংক্রান্ত-২০২২ উদযাপন কমিটি’।
জেলা প্রশাসক বলেন, “বৈচিত্র্যের এই উৎসবে আমি বিমোহিত। এই উৎসব আমাদের এক করে দিয়েছে। এটাই বাংলার চিরায়ত রূপ। এভাবেই অনন্তকাল চলবে।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য সৌখিন চাকমা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য বিপুল ত্রিপুরা, ঝর্ণা চাকমা এবং এমএনলারমা ফাউন্ডেশন এর সভাপতি বিজয় কেতন চাকমা।
স্থানীয় সামাজিক সংগঠন হিলর প্রোডাকশনের সভাপতি সুপ্রিয় চাকমা শুভ বলেন, “এটা খুবই আনন্দের যে, করোনাভাইরাসকে জয় করে আমরা আবার উৎসবে ফিরতে পেরেছি। এই উৎসব আমাদের প্রাণের উৎসব।
“পার্বত্য চট্টগ্রামের সংস্কৃতির সুরক্ষা ও পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে পাহাড়ে শান্তির সুবাতাস বইবে এটাই আজকের দিনে আমাদের প্রত্যাশা। আমরা সারাদেশের মানুষকে বিজুর শুভেচ্ছা জানাই।”
এছাড়া গর্জনতলী, কেরাণী পাহাড়সহ বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয়দের উদ্যোগে পালিত হয় ফুলবিজুর কর্মসূচি।
ফুলবিজুর পর, বুধবার মূল বিজুর দিন চলবে বাড়ি বাড়ি বেড়ানো আর নানান স্বাদের খাবার গ্রহণ। বৃহস্পতিবার ‘গজ্যাপজ্যা দিন’ বা বিশ্রামের দিন পালন করা হবে।
‘বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, বিষু, বিহু, সাংক্রান্ত-২০২২ উদযাপন কমিটির উদ্যোগেও রোববার আরেকটি শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক ও সাংষ্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগেও বিভিন্ন কর্মসূচি চলছে।