‘নিউজ-টিউজ করিও না বাপো, বৈধ দিয়া দ্যাশ চলেই নাই’

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মো. সুরুজ্জামালসহ বালু ব্যবসায়ীরা ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন; যাতে হুমকির মুখে পড়েছে নদীতীর সংরক্ষণ প্রকল্প।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 March 2022, 03:59 PM
Updated : 30 March 2022, 03:59 PM

অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কথা স্বীকার করছেন এই ব্যবসায়ীরা। স্বীকার করার পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নেতা সুরুজ্জামাল সাংবাদিকদের হুমকিও দিয়েছেন।

সুরুজ্জামাল বলেন, “নিউজ-টিউজ করিও না বাপো। এইগুলা নিয়া নাচানাচি করিয়া খাওয়া নাই, বুঝছেন? আমার শালা একডা গোয়েন্দা, আরেকডা আছে সাংবাদিক।

“বৈধ দিয়া দ্যাশ চলেই নাই, বোঝেন নাই? আইন করে বাঁচার জন্যে। আইন ধরলে কেউ বাঁচপার পাইল না হয়। কোর্টে জবাব-টবাব দেয়া আছে, বুঝছেন? ঝামেলা কইরেন না। ভালো হবে না।”

অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে নদীতীর সংরক্ষণ প্রকল্প।

মাইকিং করেও এই ব্যবাসয়ীদের সচেতন করা যাচ্ছে না বলে বলে অভিযোগ করেছেন জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন।

প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ বলেন, সরকার এ জেলায় পাঁচ কোটি ৮৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে স্থায়ীভাবে নদীতীর সংরক্ষণে কাজ করছে। চলতি বছর ৩১ মে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা।

“নির্মাণাধীন কাজের পাশে যেন কেউ বালু উত্তোলন করতে না পারে সেজন্য মাইকিং করে সচেতন করার কাজ চলছে। কিন্তু কেউ কর্ণপাত করছে না। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।”

মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলার রাজিবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের মোহনগঞ্জ বাজার সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদে স্থায়ীভাবে নদীতীর সংরক্ষণের কাজ চলছে। তার মাত্র কয়েকশ গজের মধ্যেই দিনের বেলা গোটা দশেক ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে।

রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর গ্রামে দেখা গেছে, চারটি ড্রেজার একইভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

মোহনগঞ্জ এলাকার নাইমুর রহমান বাবু, ইসমাইল হোসেনসহ এলাকাবাসী বলেন, সরকার নদীভাঙন থেকে তাদের রক্ষার জন্যে প্রকল্প দিয়েছে। কিন্তু বালু উত্তোলনকারীরা এই প্রকল্পকে হুমকির মুখে ফেলেছেন।

বালু ব্যবসায়ীরা সাইফুল ইসলাম বলেন, “আদালতে মামলা হয়েছিল। জামিনে বের হয়ে এসে তারা আবারও ড্রেজার দিয়ে বালু তুলে ব্যবসা করছে। আমি তাদের সঙ্গে শেয়ারে ব্যবসা করছি।”