চায়ের রেকর্ড উৎপাদনের পর এবার নজর গুণগত মানে

বাংলাদেশে চায়ের রেকর্ড উৎপাদনের পর এবার গুণগত মানের দিকে নজর দিচ্ছে চা বোর্ড। এ লক্ষ্যে চা উৎপাদন এবং ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের দক্ষতা উন্নয়নে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ৫ দিনের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে।

মৌলভীবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 March 2022, 05:15 AM
Updated : 7 March 2022, 05:15 AM

রোববার দুপুরে বাংলাদেশ চা বোর্ডের শ্রীমঙ্গল প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিট (পিডিইউ) মিলনায়তনে প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের পরিচালক এ কে এম রফিকুল হকের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে আশরাফুল বলেন, বাংলাদেশে এখন চায়ের উৎপাদন ক্রমবর্ধমান পর্যায়ে রয়েছে। বর্তমানে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদার তুলনায় আমাদের চায়ের উৎপাদন অনেক বেশি হচ্ছে। এখন রপ্তানির দিকে নজর দিতে হবে। তবে চা রপ্তানির ক্ষেত্রে কোয়ালিটি চা উৎপাদনের কোন বিকল্প নেই। চায়ের কোয়ালিটি ধরে রেখে ২০২৫ সালে ১৪০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নিয়ে তারা কাজ করছেন।

তিনি বলেন, “আমাদের টি প্ল্যান্টার্স টি টেস্টিং বিষয়টি ইনফরমালি শিখে থাকেন। এ বিষয়ে এটাই প্রথম একটি ফরমাল কোর্স। কোর্সে অংশগ্রহণকারীরা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে টি টেস্টিং বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে সক্ষম হবেন বলে মনে করি।”

কর্মশালায় প্রথম ধাপে পঞ্চগড়, লালমনিরহাটসহ দেশের বিভিন্ন চা বাগান ও চা নিলামকারী ব্রোকার্স হাউজের ৩২ জন প্রতিনিধি অংশ নেন।

বাংলাদেশ চা গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ড. মোহাম্মদ আলী, বাংলাদেশ চা বোর্ডের সচিব মোহাম্মদ রুহুল আমীন এবং ফিনলে কোম্পানির ভাড়াউড়া ডিভিশনের জেনারেল ম্যানেজার জি এম শিবলী, বিটিআরআই ও পিডিইউ এর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারাসহ চা শিল্পের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

পিডিইউ-এর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রফিকুল হক বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে ১৬৭টি চা বাগান রয়েছে; যার মোট আয়তন ২ লাখ ৭৯ হাজার ৪৩৯ দশমিক ৬৩ একর। এর মধ্যে চা চাষাধীন জমি রয়েছে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৫১৫ দশমিক ৭৯ একর। এছাড়াও ক্ষুদ্রায়ন চা চাষাধীন জমির পরিমাণ প্রায় ৮ হাজার ৫৭ একর।

“দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানীমুখী এ চা শিল্পের উৎপাদনের একটা অংশ বিদেশে রপ্তানী করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করার লক্ষ্যে কাজ করছে বাংলাদেশ চা বোর্ড। তারই ধারাবাহিকতায় গুণগত মানের চা উৎপাদন এবং উৎপাদিত চায়ের মান যাচাইয়ের জন্য দক্ষ টি টেস্টার (চা আস্বাদক) তৈরির জন্য প্রাতিষ্ঠানিক এ কোর্সের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিট। যা অব্যাহত থাকবে।”

এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল জেরিন চা বাগানের প্রধান ব্যবস্থাপক সিনিয়র টি প্ল্যান্টার্স বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে সেলিম রেজা জানান, চা উৎপাদন শুরুর পর থেকেই তারা নিজেদের মতো করে চায়ের গুনাগুণ পরীক্ষা করে আসছেন এবং ভালোমানের চায়ের জন্য তারা সর্বদা সজাগ থাকেন। চায়ের মান নিয়ন্ত্রণ কোন ছোট বিষয় নয়। এর জন্য অনেক অনেক গুলো বিষয় মেনে চলতে হয়।

এ ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি।

ফিনলে কোম্পানির ভাড়াউড়া ডিভিশনের জেনারেল ম্যানেজার জি এম শিবলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভালো চা হলে ভালো দাম পাওয়া যায়। অধিক মুনাফা অর্জনের জন্যও এটি নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।”

শ্রীমঙ্গল চা নিলাম কেন্দ্র পরিচালনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জহর তরফদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ প্রশিক্ষণে শ্রীমঙ্গল চা নিলামে অংশ নেওয়া ব্রোকার্স হাউজের টি টেস্টাররাও অংশ নিয়েছেন। অকশনে ভালো মানের চা অনেক দামে বিক্রি হয়।”