কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার দপ্তরের তালা খুলল শর্তসাপেক্ষে

কয়েকটি শর্তে পাঁচ দিন পর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার দপ্তরের তালা খুলে দিয়েছেন আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

কুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Jan 2022, 04:30 PM
Updated : 24 Jan 2022, 04:30 PM

সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তালা খুলে দিলে রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক মো. আবু তাহের তার দপ্তরে প্রবেশ করেন।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান একথা জানান।

কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে একজনকে রেজিস্ট্রার পদে দায়িত্ব দেওয়া ও বর্তমান রেজিস্ট্রারকে অপসারণের দাবিতে গত বুধবার সন্ধ্যায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রেজিস্ট্রারের দপ্তরে তালা দেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করে বলেন, কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে রেজিস্ট্রার পদে দায়িত্ব দেওয়া, বর্তমান রেজিস্ট্রারকে অপসারণ, কর্মচারীদের পদোন্নতির নীতিমালা বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবিতে গত বুধবার থেকে রেজিস্ট্রার দপ্তরে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করে আসছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সোমবার আন্দোলনকারীরা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে সোমবার সকাল ১০টায় এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভা করা হয়। এতে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির, ট্রেজারার অধ্যাপক মো. আসাদুজ্জামান, শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনায় বসেন আন্দোলনকারীরা। এরপর বিকালে আন্দোলনকারীরা তালা খোলার সিদ্ধান্ত নেন।

তবে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বর্তমান রেজিস্ট্রার অপসারণ ও তাদের দাবি মানা না হলে পুনরায় আন্দোলন করা হবে বলে জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আলোচনা সাপেক্ষে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে। ৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কর্মকর্তা থেকে রেজিস্ট্রারের দেওয়া না হলে ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে আবার আন্দোলনে যাওয়া হবে।

এছাড়া কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অন্যান্য উত্থাপিত দাবি আগামী ১৫ই ফেব্রুয়ারির মধ্যে সিন্ডিকেট মিটিং করে বাস্তবায়ন করারও দাবি জানান তারা।

কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান বলেন, “আমরা বর্তমান রেজিস্ট্রারের অপসারণ চাই, পাশাপাশি কর্মকর্তা থেকে রেজিস্ট্রার চাই। কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে রেজিস্ট্রার হলে আমাদের দাবি-দাওয়া পূরণ হবে। রেজিস্ট্রার আসার পর থেকে গত ৪ বছরে আমরা আশ্বাস ছাড়া কিছুই পাইনি। তাই আমরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হয়েছি। শর্তসাপেক্ষে আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে।”

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বুধবার সন্ধ্যায় শিক্ষক থেকে হওয়া রেজিস্ট্রারের অপসারণ দাবি করে তার দপ্তরে তালা লাগিয়ে আন্দোলন শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে রেজিস্ট্রার দপ্তরে তালা দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন আন্দোলনকারীরা। এক পক্ষ দাবি আদায়ে অনড় থাকলেও আরেক পক্ষ আগের কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়ান।

ওই পক্ষটি রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে তালা দেওয়ার বিরোধিতা করে ৮২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলে উপাচার্যকে স্মারকলিপি প্রদান করেন।

তালা লাগানোর প্রতিবাদ করে ওই অংশ রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যলয়ের গোল চত্বরে অবস্থান নেয়। আরেক পক্ষ তালা দিয়ে রেজিস্ট্রার কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রাখে।

কর্মচারী সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি কামরুল হাসান বলেন, “গুটিকয়েক ব্যক্তি রেজিস্ট্রার দপ্তরে তালা দিয়ে রেজিস্ট্রারের অপসারণ চেয়েছে। তারা রেজিস্ট্রারকে অদক্ষ বলেছেন। আমরা অপসারণ চাই না। তবে নির্ধারিত সময়ে সমস্যার সমাধান না হলে দাবি পূরণের জন্য আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক মো. আবু তাহের বলেছেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি দাওয়া পূরণ ও রেজিস্ট্রার নিয়োগ করবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। বর্তমান ভিসির মেয়াদ শেষ, নতুন ভিসিও নিয়োগ হয়ে গেছে।

“এখন একটি চিহ্নিত গোষ্ঠী অফিস তালাবদ্ধ করে ভিসির মেয়াদের শেষ সময়ে এসে পরিবেশ অস্থিতিশীল করতে চাইছে। তাদের উদ্দেশ্য নতুন ভিসির কাছ থেকে সুবিধা নেওয়া। ওই চিহ্নিত গোষ্ঠী সব সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন অপরাজনীতি শুরু করে ভিসির মেয়াদ শেষ হলেই।”