সেতু আছে, তবু মাচাই ভরসা

দীর্ঘদিন ধরে ভাঙতে ভাঙতে অচল হয়ে গেছে মাদারীপুরের চরগোবিন্দপুর গ্রামের সেতু; তবু মাচা বসিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন নিরুপায় কয়েক হাজার মানুষ।

রিপনচন্দ্র মল্লিক মাদারীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Nov 2021, 08:59 AM
Updated : 25 Nov 2021, 08:59 AM

সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের ফরাজীকান্দি, মাঝেরকান্দি, মাদবরকান্দি, ডিগ্রি খোয়াজপুর, ভসারচরসহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষ ব্যবহার করে সেতুটি।

ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য বাদল বেপারী বলেন, প্রায় ত্রিশ বছর আগে সেতুটি নির্মাণের পর এলাকাবাসীর উপকার হয়েছিল। কিন্তু অন্তত এক দশক আগে এটি অকেজো হয়ে পড়ে। তারা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কয়েকবার উদ্যোগ নিলেও বরাদ্দ পাননি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চরগোবিন্দপুর গ্রামের মৌলভীর খালের ওপর এটিএম বাজার সংলগ্ন সেতুটির প্রায় সব জায়গায় বড় বড় অংশ ভেঙে গেছে। তাছাড়া একাংশে হাঁটার জায়গা সম্পূর্ণ ভেঙে যাওয়ায় মাচা করে নিয়েছেন এলাকাবাসী। সেই মাচার ওপর দিয়ে পার হচ্ছেন শত শত মানুষ।

এলাকাবাসী জানান, মাদারীপুর শহর, স্থানীয় হাট-বাজার, স্কুল, মাদ্রাসা হাসপাতালসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোয় যাতায়াত করার বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় এই সেতু দিয়েই তারা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।

ওই এলাকার বাসিন্দা রাশেদ কামাল বলেন, প্রতিদিন হাজারো মানুষ এই সেতু দিয়ে পার হন। জরুরি হওয়ায় তারা সেতুর ওপর বাঁশের মাচা তৈরি করে নিয়েছেন।

প্রায় ১০ বছর আগে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেয় জানিয়ে তিনি বলেন, ধীরে ধীরে পলেস্তারা খসে পড়া ছাড়াও মূল সেতুর অন্তত পাঁচটি স্থান ভেঙে গেছে।

“এলাকাবাসী বিশেষত পাশাপাশি তিনটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের চলাচলে গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।”

এলাকার স্কুলশিক্ষার্থীরা সেতুটি পুনর্নিমাণের দাবি জানিয়েছে।

চরগোবিন্দপুর উত্তরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী লামিয়া আক্তার বলে, “সেতুটি যখন পার হই তখন ভয় লাগে। কখন পা পিছলে গর্ত দিয়ে নিচে পড়ে যাই!“

চরগোবিন্দপুর ইউকে উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র আফজাল হোসেন বলে, তার এক বন্ধু সেতুর ভাঙা দিয়ে পড়ে গিয়েছিল।

“তাই যখন সেতু পার হই, তখন ভয় লাগে। আমরা দ্রুত একটি সেতু চাই। সেতুটি নির্মাণ হলে আমাদের গ্রামবাসীর অনেক উপকার হবে।”

সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান ওই জায়গায় নতুন সেতু নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে তারা প্রকল্প গ্রহণ করেছেন।

“প্রকল্পটি পাস হয়ে এলে নতুন করে নির্মাণ করা হবে। আমরা আশা করছি, আগামী জুনে অর্থ বরাদ্দ পেলে আমরা সেতুটি নতুন করে নির্মাণ করে দেব,“ বলেন তিনি।

তবে আদৌ বরাদ্দ পাবেন কিনা তা তিনি বলতে পারেননি।