শহীদকন্যার সম্পত্তি জবরদখলের অভিযোগ বর্গাচাষির বিরুদ্ধে

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায় এক শহীদকন্যার ৫৮ শতক আবাদি জমি জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে এক বর্গাচাষির বিরুদ্ধে।

জয়পুরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Nov 2021, 12:35 PM
Updated : 9 Nov 2021, 12:35 PM

এই অভিযোগে মঞ্জু রানী নামের এই নারী মঙ্গলবার জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার রুনিহালী গ্রামে নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

মঞ্জু রানী দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার বৈদর গ্রামের শহীদ নৃত্য গোপালের (মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনীর হাতে নিহত) মেয়ে। তার স্বামীর বাড়ি পার্শ্ববর্তী জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার রুনিহালী গ্রামে।

মঞ্জু রানী লিখিত বক্তব্যে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী তার বাবাকে হত্যা করে। সে সময় থেকে মা উষা রানী স্বামী নৃত্য গোপালের সম্পত্তি লাভ করেন। পরবর্তীকালে এই সম্পত্তি একমাত্র মেয়ে হিসেবে মঞ্জু রানীকে দান করেন ঊষা রানী।

বৈদর গ্রামে তিনটি দাগে ৫৮ শতক আবাদি জমি মঞ্জু রানী পেয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান।

তিনি বলেন, এই ৫৮ শতক জমি ১৯৯০ সাল থেকে বর্গাচাষ করে আসছিলেন ওই গ্রামের প্রয়াত ইমারত আলীর ছেলে ধলু মিয়া।

মঞ্জুর অভিযোগ, ১৯৮৬ সালে বিয়ের পর মা উষারা নীসহ মঞ্জু রানী স্বামীর বাড়িতে অবস্থান করায় ধলু মিয়া ফসলের অর্ধেক মঞ্জু রানীর স্বামীর বাড়িতে পৌঁছে দিতেন। কিন্তু ২০০৪ সালের পর থেকে ধলু মিয়া মঞ্জু রানীকে ফসল দেওয়া বন্ধ করে নানা তালবাহানা করতে থাকেন।

মঞ্জু বলেন , “এরপর দীর্ঘদিন বিভিন্ন দেন দরবার করেও কোনো সুরাহা না হলে আমার পক্ষে স্বামী নির্মল চন্দ্র মণ্ডল গত বছর ৩১ ডিসেম্বর ধলু মিয়াকে উকিল নোটিশ পাঠান। পরে জানতে পারি ধলু মিয়া তার নামে জাল দলিল সৃষ্টি করে আমার ওই ৫৮ শতক সম্পত্তি জবরদখল করেছেন।”

সকাল সাড়ে ১০টায় আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মঞ্জু রানীর স্বামী নির্মল চন্দ্র মণ্ডল, নির্মলের ভাই মুক্তিযোদ্ধা অমল চন্দ্র মণ্ডল, স্থানীয় শালাইপুর বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান, একই এলাকার পল্লি চিকিৎসক আব্দুল খালেক প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ব্যক্তিগণ বলেন, এই সম্পত্তির প্রকৃত মালিক মঞ্জু রানী ও বর্গাচাষি ধলু মিয়া। বিষয়টি তাদের জানা আছে। শহীদকন্যার মেয়ে হয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনো বিচার পাচ্ছেন না বলে তারা বিস্মিত হয়েছেন। তারা ধলু মিয়ার কাছ থেকে মঞ্জু রানীর সম্পত্তি উদ্ধার করার ব্যবস্থা করতে সরকারের কাছে আবেদন জানান।

এ ব্যাপারে ধলু মিয়ার সাথে মোবাইল ফোনে কয়েকবার যোগাযোগ করা হলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

মঞ্জু রানীর আইনজীবী এম এ হাসান বলেন, “ধলু মিয়ার কাছ থেকে ক্ষতিপূরণসহ মঞ্জু রানী তার ৫৮ শতক সম্পত্তি ফেরত লাভের হকদার।”