ঈশ্বরদীর পাকশী ইউনিয়নের চররূপপুর জিগাতলায় শুক্রবার এই যুবক পিটুনিতে আহত হন। শনিবার সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নিহত বিপ্লব হোসেন ফকির (২৩) উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের চররুপপুর জিগাতলা গ্রামের পান্না ফকিরের ছেলে। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি।
পুলিশ এই ঘটনায় একই এলাকার পলাশ ফকিরের দুই ছেলে অন্তর ফকির (২৩) ও শান্ত ফকিরকে (২০) আটক করেছে।
মাদক সেবনে বাধা দেওয়ার কারণে এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে জানান রুপপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আতিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, বিপ্লবের সঙ্গে কিছুদিনেআগে প্রতিবেশী মাদকসেবী এক যুবকের কথাকাটাকাটি হয়। ওই সময় বিপ্লবের চাচা রতন শান্তকে চড় থাপ্পড় মারেন।
তিনি আরও বলেন, শুক্রবার রাত ৯টায় এক যুবক মোবাইল ফোনে বিপ্লবকে ডেকে নেয়। এরপর পার্শ্ববর্তী জিগাতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাদে তাকে হাত মুখ বেঁধে রেখে সারারাত ব্যাপক নির্যাতন চালায়। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও বিপ্লবের পরিবার তাকে খুঁজে পায়নি।
“সকালে প্রতিবেশী জ্যোৎস্না নামে এক মহিলাকে শান্ত নিজেই বিপ্লব ওই স্কুলের ছাদে আছে বলে জানান।”
পাকশী ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সানি মিলন এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এলাকার দুই সহোদর মাদকাসক্ত এবং ব্যবসায়ী। তারা নিহত বিপ্লবের বাড়ির পাশ দিয়ে পেছনের বাগানে গিয়ে মাদক সেবন, বিক্রয় ও আড্ডা দিত। তাদের মাদক সেবন ও বিক্রয়ে বাধা দেওয়ায় অন্তর ও শান্ত ফকিরের সঙ্গে বিপ্লবের বিরোধের সৃষ্টি হয়।
এরই জের ধরে শুক্রবার রাতে বিপ্লব ফকিরকে ধরে এনে বেদম প্রহার করে একদল যুবক। অচেতন অবস্থায় তারা বিপ্লবকে পার্শ্ববর্তী রূপপুর জিগাতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের ছাদে ফেলে রাখে। সারা রাত ধরে বিপ্লবকে পরিবারের পক্ষ থেকে খোঁজাখুজি করা হয়। পরে শনিবার সকালে স্থানীয়রা অচেতন অবস্থায় ছাদে বিপ্লবকে পড়ে থাকতে দেখে পরিবারকে খবর দেয়।
পরে লোকজন উদ্ধার করে বিপ্লবকে প্রথমে ঈশ্বরদী, পাবনা ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
ঈশ্বরদী থানার ওসি মো. আসাদুজ্জামান জানান, আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মামলার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।