তাড়াশে নয় মাসে ২৮টি ট্রান্সফরমার চুরি

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় চলতি বছরে গত প্রায় নয় মাসে জমির সেচের ও আবাসিক সংযোগের ২৮টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Sept 2021, 06:28 PM
Updated : 22 Sept 2021, 06:28 PM

সচেতনতার জন্য এলাকায় মাইকিং করেও চুরি ঠেকানো যাচ্ছে না। এসব ঘটনায় থানায় মামলা করেও প্রতিকার পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা। 

এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি তাড়াশ জোনাল অফিসের ডিজিএম মুহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন খান বলেন, চুরি হওয়া ২৮টি ট্রান্সফরমারের মধ্যে ৪/৫টি বাদে সবগুলোই জমিতে সেচ কাজে ব্যবহৃত হতো। জুলাই, অগাস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসেই চুরির ঘটনা বেশি ঘটেছে।

এ সময়ে জমি অনাবাদি থাকে, তাই ফাঁকা মাঠে থাকা ট্রান্সফরমারগুলো চোরেরা অনায়াসে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।

তিনি আরও বলেন, “থানায় বেশ কয়েকটি মামলা দিয়েছি, কিন্তু এখনও কোনো চোর ধরা পড়েনি। চুরি ঠেকাতে উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশকে লিখিতভাবে অবগত করেছি। জনসচেতনতা বাড়াতে এলাকায় মাইকিং করেছি। এছাড়াও গ্রাহকদের বলেছি সজাগ থাকতে। তারপরও চুরির ঘটনা ঘটছেই।”

তিনি জানান, এসব সংযোগে ৫ ও ১০ কেভি ধারণ ক্ষমতার ট্রান্সফরমার ব্যবহার হয়ে থাকে। ৫ কেভির মূল্য ৩৮ হাজার ও ১০ কেভির মুল্য ৫৯ হাজার টাকা। কোনো ট্রান্সফরমার চুরি হলে নতুন ট্রান্সফরমার ক্রয় ও স্থাপনের খরচ বহন করতে হয় গ্রাহকদের।

আশরাফ উদ্দিন খান আরও বলেন, চলতি বছর আবাসিক সংযোগে ব্যবহৃত ৪/৫ ট্রান্সফরমার চুরি হলেও পুনরায় ট্রান্সফরমার স্থাপনে গ্রাহকদের কাছ থেকে এ পর্যন্ত ২/৩টি আবেদন পাওয়া গেছে। আর সেচ কাজে ব্যবহৃত ট্রান্সফরমারগুলোর গ্রাহকরা এখনও আবেদন করেনি।

নভেম্বর ও ডিসেম্বরে চাষাবাদের মৌসুম শুরুর আগে হয়তো তারাও আবেদন করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করছেন।        

সর্বশেষ ১০ সেপ্টেম্বর রাতে তাড়াশ উপজেলার তালম ইউনিয়নের পারির বড়ইচড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল কাদের ও ছোরমান আলীর সেচ কাজে ব্যবহৃত দুটি ট্রান্সফরমার চুরি হয়।

ক্ষতিগ্রস্তরা বলেন, টাকা খরচ করে আবার ট্রান্সফরমার লাগালেও নিরাপত্তা নেই। এ অবস্থা চলতে থাকলে প্রজেক্টের জমিগুলো পানির অভাবে অনাবাদি হয়ে পড়ে থাকবে।  

আবাসিক সংযোগ ব্যবহারকারী ভুক্তভোগী আক্কাস আলী, সোলায়মান, সাঈদ মোল্লা, আ. রশিদ ও সোবহানসহ অনেকেই বলেন, ট্রান্সফরমার চুরির ভয়ে শিকল দিয়ে খুঁটির সাথে আটকে রেখেছিলেন। তবুও রক্ষা হয়নি। রাতে পুলিশের টহল জোরদার করা হলে চুরির ঘটনা ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না।

তাড়াশ থানার ওসি মো. ফজলে আশিক বলেন, ট্রান্সফরমার চুরির বিষয়ে প্রাপ্ত বেশ কয়েকটি এজাহারকে অভিযোগ হিসাবে গণ্য করে তদন্ত চলছে। মামলা হলে চোরেরা নাম ঠিকানা জেনে সর্তক হয়ে যাবে। তাই এমনটি করা হয়েছে।

এসব ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে না পারলেও চুরি হওয়া ট্রান্সফরমার উদ্ধার এবং চোরদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে বলে জানান ওসি।