মাদারীপুরে বিরোধ মেটাতে শাজাহান খানের সভায় সাড়া মেলেনি

প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভাপতির নির্দেশে মাদারীপুরে আওয়ামী লীগের ঐক্যবদ্ধ সংগঠনিক কাজ চালানোর জন্য শাজাহান খানের ডাকা সভায় কেউ যোগ দেননি।

রিপনচন্দ্র মল্লিক মাদারীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Sept 2021, 05:44 PM
Updated : 22 Sept 2021, 05:44 PM

গত মঙ্গলবার ডাকা এই সভায় থাকার জন্য ছয় নেতাকে শাজাহান খান চিঠি দিলেও তারা যাননি।

গত ৯ সেপ্টেম্বর গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদারীপুরে সাত নেতাকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন।

তার পরিপ্রেক্ষিতে মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও দলের কেন্দ্রীয় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান ছয় নেতাকে চিঠি দিয়ে সভায় আসতে বলেন।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর শাজাহান খান আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবাহান মিয়া (গোলাপ), শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য শাহাবুদ্দিন ফরাজি ও আনোয়ার হোসেনকে চিঠি দেন।

মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় সভার স্থান নির্ধারণ করা হয়।  

সভায় ছয় নেতার কেউ যোগ না দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম বলেন, “আমাদের সভানেত্রী শেখ হাসিনা শাজাহান খানকে আওয়ামী লীগ হওয়ার কথা বলেছেন। সবাইকে নিয়ে কাজ করার কথা বলেছেন। কিন্তু শাজাহান খান নিয়ম মানেন না। তাই তার ডাকে কেউ সাড়া দেয়নি। সভায়ও যোগদান করেনি।”

নাসিম আরও বলেন, “তিনি (শাজাহান খান) নিজের মতো করে নিজেকে সমন্বয়ক বানিয়ে মিটিং ডাকলেন। আবার তিনি জেলায় তার ভাই ও আওয়ামী বিরোধী লোকজন নিয়ে ইউনিয়ন পর্যায়ে আওয়ামী লীগের সম্মেলন করে যাচ্ছেন। শাজাহান খান সেখানে আবার ভার্চুয়াল বক্তব্যও দিচ্ছেন। এটা তার তো দ্বিমুখী আচরণ। তার প্রতি দলের কোনো ব্যক্তির আস্থা ও বিশ্বাস নেই।”

শাজাহান খান সাংবাদিকদের বলেন, “সভাটি মঙ্গলবার বিকালে হওয়ার কথা থাকলেও হয়নি। কারণ মাদারীপুরের আমাদের সাত জনের মধ্যে দুজনই ছিলেন না। প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবাহান মিয়া প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সফরে আছেন। তিনি দেশে ফিরলেই আবার এই সভাটি ডাকা হবে।”

তিনি আরও বলেন, “আমি সব সময়ই দলের নিয়ম মেনে রাজনীতি করি। এখনও তাই করছি। আমার নির্বাচনী এলাকায় দলকে সংগঠিত করতে ইউনিয়ন পর্যায় সম্মেলন করা হচ্ছে। সেখানে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নেতৃত্বে দিচ্ছেন। এরপরেও জেলা আওয়ামী লীগ ও কিছু নেতাকর্মী আমার বিরোধিতা করে বক্তব্য দিচ্ছেন। এটাই তাদের কাজ। এসব নিয়ে আমার মাথা ব্যাথা নেই।”

জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা বলেন, “শাজাহান খান দলের বাইরের তার নিজস্ব কিছু লোক নিয়ে আবার সেই আগের মত তৃণমূলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন। দলের সাংগঠনিক সমস্যা সমাধান নয়, বরং সমস্যা সৃষ্টি করাই তার কাজ। দল ঐক্যবদ্ধ হোক তা তিনি (শাজাহান খান) চান না।”

শাহাবুদ্দিন বলেন, জেলা আওয়ামী লীগ ও উপজেলা আওয়ামী লীগ বাদ দিয়ে তিনি কীভাবে সদর ও রাজৈর উপজেলার ইউনিয়নগুলোয় সম্মেলন করেন? তিনি আবারও গঠনতন্ত্রবিরোধী কাজ করে চলেছেন; যা দলের বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কারণ হচ্ছে।