কমরেড মণি সিংহের জন্মদিনে নানা আয়োজন নেত্রকোণায়

নানা আয়োজনে নেত্রকোণার দুর্গাপুরে মণি সিংহের ১২০তম জন্মদিন পালিত হয়েছে। 

নেত্রকোণা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 July 2021, 03:59 PM
Updated : 28 July 2021, 03:59 PM

বুধবার কমরেড মণিসিংহ জন্মদিন উদযাপন কমিটি স্বাস্থ্যবিধি মেনে কর্মসূচি পালন করে।

১৯০১ সালের ২৮ জুলাই কলকাতায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন।

কর্মসূচির মধ্যে ছিল মণি সিংহের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ, দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও আলোচনা সভা।

সকালে কমরেড মণি সিংহ স্মৃতি জাদুঘর চত্বরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা তার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। পরে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন শেষে ভার্চুয়ালি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মণি সিংহের ছেলে দিবালোক সিংহ সাংবাদিকদের বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে এ বছর আয়োজন সীমিত আকারে করা হয়েছে।

সিপিবির কেন্দ্রীয় নেতা আসলাম খানের সঞ্চালনায় ও জন্মদিন উদযাপন কমিটির আহবায়ক প্রবীণ রাজনীতিবীদ দুর্গা প্রসাদ তেওয়ারীর সভাপতিত্বে এই সভা হয়।

এতে আলোচনায় অংশ নেন সিপিবি কেন্দ্রীয় সভাপতি মোজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান খান, নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক কাজী মো. আব্দুর রহমান, খেলাঘর চেয়ারপার্সন মাহফুজা খানম, এম এম আকাশ, সাবেক সংসদ সদস্য ছবি বিশ্বাস, মণি সিংহের সহযোগী অসিত বরণ রায়, মনি সিংহ ট্রাস্টি বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক দিবালোক সিংহ, দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল্লহ হক প্রমুখ।

আলোচনা শেষে ঢাকা ও স্থানীয় শিল্পীদের অংশগ্রহণে অনলাইনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, মণি সিংহ ১৯০১ সালের ২৮ জুলাই কলকাতায় এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা কালী কুমার সিংহের মৃত্যু হলে মা সরলা দেবী সাত বছরের মণি সিংহকে নিয়ে ময়মনসিংহের (বর্তমানে নেত্রকোনা) সুসং দুর্গাপুর চলে আসেন।

স্কুলের শিক্ষা গ্রহণ করার সময় মণি সিংহ ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হন। সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ‘অনুশীলন’ দলে যোগ দিয়ে ক্রমেই বিপ্লবী কর্মকান্ডে স্থান করে নেন।

১৯২৮ সাল থেকে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সার্বক্ষণিক কর্মী হিসেবে দলের কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন। এ সময় তিনি কলকাতায় শ্রমিক আন্দোলনেও কাজ করেন। এ সময় তিনি কারাবরণও করেন।

নানা আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তিনি এক পর্যায়ে ‘টংক’ আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত হন।

১৯৪৪ সালে মণি সিংহ সারা বাংলার কৃষাণ সভার প্রেসিডিয়াম সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৪৫ সালে নেত্রকোনায় অনুষ্ঠিত নিখিল ভারত কৃষাণ সভার সম্মেলনের অভ্যর্থনা কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে মণি সিংহ ছিলেন সম্মেলনের অন্যতম প্রধান সংগঠক।

১৯৪৭ সালের আগে ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রাম করতে গিয়ে কমরেড মণি সিংহকে অসংখ্যবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জেল-জুলুম-নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছে।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে বন্দিরা রাজশাহীর জেল ভেঙে তাকে মুক্ত করেন। তিনি ন্যাপ, কমিউনিস্ট পার্টি, ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা বাহিনী গড়ে তুলে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেন। মুক্তিযুদ্ধকালে মুজিবনগর সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে ছিলেন তিনি।