বুধবার দুপুরে রসায়ন বিভাগে এই সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।
‘নিখোঁজ’ জাহিদ হাসান রাজু রসায়ন বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী।
সংবাদ সম্মেলনে জাহিদের মা আকলিমা বেগম লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
তিনি বলেন, গত ২৪ জুন থেকে তার ছেলে নিখোঁজ রয়েছেন। সেদিন ঢাকার মিরপুরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তিনি মাগরিবের নামাজ পড়তে গিয়ে আর ফিরে আসেননি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন তখন থেকেই বন্ধ।
অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে না পাওয়ায় ২৬ জুন পল্লবী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন বলে জানান তিনি।
“পরে থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করেছি আমরা; কিন্তু এখনও পুলিশ আমাদেরকে তার ব্যাপরে কোনো তথ্য দিতে পারেনি।”
আকলিমা বেগম বলেন, গত ২৬ জুন সকালে একটি নম্বর থেকে ছেলেকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে ১ লাখ টাকা দাবি করা হয়। পরে জাহিদের ফোন নম্বর থেকে ফোন করে আবার ৫০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। পুনরায় ৩০ হাজার টাকা দাবি করে একটি নগদ একাউন্টের নম্বর দেয়।
জাহিদকে ফিরিয়ে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তার মা আকলিমা বেগম।
জাহিদের স্ত্রী হাফসা আক্তার বলেন, “গত বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) সন্ধ্যায় আমার সাথে জাহিদের কথা হয়েছিল। এরপর থেকে তার সাথে আর কথা হয়নি। ওইদিন রাতে তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি; কিন্তু যোগাযোগ করতে পারিনি। রাত ১২টার দিকে ওনার রুমমেট মিজানুর রহমানকে ফোন দিলে বাসায় ফেরেননি বলে জানান।”
জাহিদের রুমমেট মিজানুর রহমানের বরাত দিয়ে হাফসা আক্তার বলেন, “জাহিদের রুমমেট মিজানুর ওইদিন কারখানার কাজে ছিল। কারখানা থেকে ফিরে এসে মিজানুর জাহিদকে আর রুমে দেখেননি।”
এ ব্যাপারে পল্লবী থানার ওসি পারভেজ ইসলাম বলেন, “নিখোঁজ জাহিদ হাসানকে উদ্ধার করতে আমরা সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে এখনও পর্যন্ত কোনো সন্ধান মেলেনি। গতকাল আমরা একটা সংবাদ পাই মৌলভীবাজারে তাকে পাওয়া গেছে; সে অনুযায়ী অভিযান পরিচালনা করি কিন্তু হদিস পাওয়া যায়নি।”
ওসি বলেন, “তার পরিবার দাবি করছে গত ২৬ তারিখে তার ফোন থেকে কল এসেছে; কিন্তু এর সত্যতা আমরা পাইনি। তার ফোন সর্বশেষ চালু ছিল ২৪ তারিখেই। এরপর থেকে আর কোনো তথ্য আমরা পাচ্ছি না।”
সংবাদ সম্মেলনে জাহিদের মা, স্ত্রী, মেয়ে ও তার স্ত্রীর বড়ো ভাই উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মাহবুব কবির, অধ্যাপক সুবর্ণা কর্মকার ও সহযোগী অধ্যাপক আওলাদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
জাহিদ হাসান রাজুর বাড়ি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা থানার দক্ষিণ গোলবুনিয়া গ্রামে। টিউশনের সুবিধার্থে রাজধানীর মিরপুরে মেসে ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি।