ঠাকুরগাঁও ‘লকড ডাউন’, শনাক্তের হার ৪০ শতাংশ

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ঠাকুরগাঁও জেলায় সাত দিনের সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি।

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2021, 01:29 PM
Updated : 23 June 2021, 01:29 PM

বুধবার বিকেলে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান জানান, পরদিন সকাল ৬টা থেকে আগামী ৩০ জুন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এ ‘লকডাউন’ চলবে।

জেলা প্রশাসক মাহবুবুর বলেন, জেলায় কঠোর বিধিনিষেধ থাকার পরও করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। তাই বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আগামী ৭ দিনের ‘কঠোর লকডাউনের’ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

“লকডাউনে বেঁধে দেওয়া শর্তাবলী সবাকেই মেনে চলবেন। অযথা ঘরের বাইরে বের হবেন না। যারা শর্তাবলী ভঙ্গ করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ ঘোষণার আগে আগে জেলায় ‘শনাক্তের হার ৪০ দশমিক ১৯ শতাংশ’ পাওয়া যায়।

এর আগে দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

গত ১৬ জুন থেকে সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটি। কঠোরবিধি নিষেধ আরোপের শেষ দিন ছিল বুধবার।

জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল সভায় সিদ্ধান্ত হয়, এ লকডাউন চলাকালে জেলায় সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শপিং মল, রেস্তোরাঁ ও চায়ের দোকান বন্ধ থাকবে। সাপ্তাহিক হাট ও গরুর হাট বন্ধ থাকবে। তবে মুদি দোকান, কাঁচাবাজার, মাছের বাজার এবং ফলের দোকান খোলা থাকবে।

এছাড়া জেলার পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার এবং বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।

জেলার ভেতরে ও আন্তঃজেলা দূরপাল্লার গণপরিবহন, ইজিবাইক, থ্রি-হুইলারসহ সব যান্ত্রিক যানবাহন বন্ধ থাকবে।

অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। তবে জরুরি পরিষেবা, চিকিৎসাসেবা, কৃষিপণ্য, খাদ্য সরবরাহ ও সংগ্রহ, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন, ইন্টারনেট, ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, ওষুধ শিল্পসংশ্লিষ্ট যানবাহন ও কর্মীরা এর আওতাবহির্ভূত।

এদিকে, ঠাকুরগাঁওয়ের সিভিল সার্জন ডা. মাহফুজার রহমান সরকার বলেন, সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের শুরুতে জেলায় ৮২১টি নমুনা পরীক্ষায় ৩৩০ জন শনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ৪০ দশমিক ১৯ শতাংশ। এ সময়ে মারা গেছেন ৯ জন।

১৭ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত জেলায় সাত দিনের বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। তাতে পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় আগামী বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ৩০ জুন সন্ধ্যা পর্যন্ত ঠাকুরগাঁও জেলায় সর্বাত্মক লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলেন তিনি।

গত বছরের ১১ এপ্রিল ঠাকুরগাঁও জেলায় প্রথম করোনা সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়। এ পর্যন্ত জেলায় ১১ হাজার ৭২১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ৫৩২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৪০ শতাংশ।

এ পর্যন্ত জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৬০ জন।