পাবনায় কোভিডে আরও দুজনের মৃত্যু, সংক্রমণ বেশি ঈশ্বরদীতে

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আরও দুইজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

পাবনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2021, 12:12 PM
Updated : 23 June 2021, 12:12 PM

বুধবার দুপুরে হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ইয়োলো জোনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান।

প্রয়াতরা হলেন, সদর উপজেলার ভাড়ারা ইউনিয়নের সূর্য সরকারের ছেলে আব্দুর রশিদ সরকার (৫০) এবং আরিফপুর মহল্লার আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে ইয়াসমিন আক্তার (৩৮)।

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আইয়ুব হোসেন জানান, করোনাভাইরাস পজিটিভ আসা রোগীদের রেড জোনে এবং রিপোর্ট না আসা সন্দেহভাজন উপসর্গের রোগীদের ইয়েলো জোনে রাখা হয়

ইয়েলো জোনে থাকা রশিদ সরকার এবং ইয়াসমিন আক্তার বুধবার দুপুরে মারা গেছেন। তাদের নমুনা পাঠানো হয়েছে।

এছাড়া পাবনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ২৬ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন বলেন তিনি।

এদিকে, পাবনায় সংক্রমণের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে ঈশ্বরদী উপজেলা।

পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরী বলেন, জেলায় শনাক্ত বেশীর ভাগই ঈশ্বরদী উপজেলার রোগী। জেলার মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর প্রায় এক তৃতীয়াংশই ঈশ্বরদী উপজেলার।

ঈশ্বরদীর সীমানার পাশের জেলা নাটোর ও কুষ্টিয়ায় সংক্রমণ মারাত্মক রূপ নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঐ সব এলাকায় যাতায়াত এবং রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে বিভিন্ন এলাকার বিপুল সংখ্যক শ্রমিকের অবাধ চলাচলের ফলে ঈশ্বরদীতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে; যার প্রভাব জেলার অনত্র পড়েছে বলে মনে করছেন তিনি।

ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আসমা খান জানান, এ পর্যন্ত ঈশ্বরদী উপজেলায় প্রায় ১২ শতাধিক করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। গত দুই সপ্তাহে করোনা সংক্রমণ আরও বেড়েছে।

তিনি বলেন. “ঈশ্বরদী করোনা সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকির এলাকা হলেও, দেশের গুরুত্বপূর্ণ ও মেগা প্রকল্প হওয়ার কারণে এবং কেপিআই জোন হওয়ায় ঈশ্বরদীতে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারছে না।

“জনসাধারণকে সচেতন করার চেষ্টা করেও সাফল্য আসেনি।”

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সূত্র জানায়, মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৬৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৮৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালসহ বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৮৪ জন।

পাবনায় করোনাভাইরাস চিকিৎসায় পিসিআর ল্যাবের অনুমোদন ও মেশিন বরাদ্দ হলেও এখনো তা স্থাপন করা হয়নি। পাশাপাশি বায়োসেফটিক র‌্যাক না থাকায় অবকাঠামোগত জটিলতাও সৃষ্টি হয়েছে।

এছাড়া, করোনা চিকিৎসায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজ শেষ হয়নি। এ অবস্থায় সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হবে বলে মনে করছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা।

তবে, এসব সংকট কাটাতে প্রচেষ্টা অব্যহত আছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরী।

তিনি বলেন, দুই-এক দিনের মধ্যেই পিসিআর মেশিন পাবনায় পৌঁছে যাবে। টেকনিশিয়ান ও বায়োসেফটিক র‌্যাক সংগ্রহের ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। আশা করছি আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই পাবনায় পিসিআর ল্যাবে করোনা পরীক্ষা শুরু করা যাবে।

জেনারেল হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থার লাইন টানার কাজ শেষ। অক্সিজেন প্লান্ট বসাতে কিছুটা সময় লাগবে। তবে, বিকল্প উপায়ে পাইপ লাইনগুলো ব্যবহার করতে বড় সিলিন্ডারে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।