খুলনায় একদিনে করোনাভাইরাসে ১১ মৃত্যু

গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনার তিন হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে আরও ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

খুলনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 June 2021, 07:37 AM
Updated : 22 June 2021, 08:10 AM

মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ফোকাল পার্সন ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কোভিড আক্রান্ত সাতজনের মৃত্যু হয়।

এরা হলেন- নগরের খালিশপুরের মোশারফ হোসেন (৬৪), সোনাডাঙ্গা এলাকার কাজী মাছরুফা রহমান (৬৩), তেরখাদার তাসলিমা বেগম (৮০), রূপসার আঞ্জুমান আক্তার (৫৫), সাতক্ষীরার তালার সৈয়দ শাহরিয়ার (৭১), নড়াইল সদরের খাদিজা পারভীন (৩৮) ও মোংলার লাকি বেগম (৫০)।

ডা. সুহাস বলেন, ১৩০ শয্যার কোভিড হাসপাতালে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ১৪৯ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। যার মধ্যে রেডজোনে ৯৮ জন, ইয়ালোজোনে ১৩ জন, এইচডিইউতে ১৮ জন এবং আইসিইউতে ২০ জন চিকিৎসাধীন।

এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ২২ জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৪ জন।

খুলনা সদর হাসপাতালের কোভিড ইউনিটের মুখপাত্র ডা. কাজী আবু রাশেদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় যশোরের নওয়াপাড়ার শেখ মোশারফ হোসেন (৭৬) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

এছাড়া বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৩২ জন; এর মধ্যে ১৯ জন পুরুষ ও ১৩ জন নারী।

গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ডা. গাজী মিজানুর রহমান জানান, ২৪ ঘণ্টায় তার হাসপাতালের কোভিড ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

এরা হলেন- নগরের সাতরাস্তা মোড় এলাকার ফিরোজা বেগম (৫২), সোনাডাঙ্গা গোবরচাকা এলাকার শেখ নুরউদ্দিন (৩১) ও যশোরের মনিরামপুরের বিজয় কুণ্ডু (৬৭)।

বর্তমানে হাসপাতালে ৭৫ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে আইসিইউতে ছয়জন আর এইচডিইউতে পাঁচজন চিকিৎসাধীন।

এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২০ জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৭ জন। হাসপাতালের আরটিপিসিআর মেশিনে ১৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৩ জনের করোনাভাইরাস পজিটিভ এসেছে বলে বলে জানান মিজানুর। 

এদিকে সোমবার রাতে খুলনা মেডিকেল কলেজের পিসিআর মেশিনে ৩৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৭৭ জনের করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে বলে কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ জানান।

এর মধ্যে খুলনার ৩২৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে ৮০ জনের শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া বাগেরহাটে ১১ জন, সাতক্ষীরায় তিনজন, যশোরের পাঁচজন, নড়াইলে তিনজন, কুমিল্লার একজন, বরগুনার একজন, নাটোরের একজন ও টাঙ্গাইলের একজন রয়েছেন।

এদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় খুলনায় মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে এক সপ্তাহের সর্বাত্মক লকডাউন।

লকডাউনে সকাল থেকে জেলায় গণপরিবহন, মার্কেট, দোকানপাট, শপিংমল, সাপ্তাহিক হাট ও বেসরকারি অফিস বন্ধ রয়েছে। খুলনা রেলস্টেশনে ট্রেনের আগমন ও বহির্গমন বন্ধ রয়েছে।

তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ও কাঁচাবাজারের দোকান সকাল ৭টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এবং ওষুধের দোকান সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে। ব্যাংক খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে বসে খাওয়া যাবে না।

খুলনা সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য সচেতন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এ কারণেই এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।