এর আগে একদিনে ৮০০ জনের করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল।
বুধবার বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক রাশেদা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের ১০ জেলায় আরটি-পিসিআরের মাধ্যমে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১ হাজার ২৭৭টি, র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা হয়েছে ৭০৩টি এবং জিন এক্সপার্ট পদ্ধতিতে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৪৬টি।
তিন পদ্ধতিতে মোট ২ হাজার ২৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৮১৮ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৪০ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
আগের দিনের চেয়ে ৬৬টি নমুনা বেশি পরীক্ষা হয়েছে। আগের দিন শনাক্তের হার ছিল ৪০ দশমিক ৮২ শতাংশ।
রাশেদা আরও জানান, ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে করোনায় মারা গেছেন ১০ জন। সুস্থ হয়েছেন ১৫৫ জন। এ নিয়ে বিভাগের ১০ জেলায় এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের মোট সংখ্যা ৪১ হাজার ৮৪৬। সুস্থ হয়েছেন ৩৩ হাজার ৫৪৬ জন। এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিভাগে মারা গেছেন ৭৪৯ জন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি মাসের প্রথম ১৬ দিনে (১-১৬ জুন) বিভাগে ৭ হাজার ৫৫৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ সময়ে মারা গেছেন ১০৪ জন। এর আগে ১৬ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ১৬ দিনে ১ হাজার ৮২৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। ওই ১৬ দিনে মারা গেছেন ৫০ জন।
জেলাভিত্তিক হিসাবে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১২ হাজার ৪২ রোগী শনাক্ত হয়েছেন খুলনা জেলায়। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনায় নতুন ২২২ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ফোকাল পার্সন ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার বলেন, ১০০ শয্যার করোনা ইউনিট বুধবার থেকে ১৩০ শয্যা করা হয়েছে। বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত করোনা ইউনিটে রোগী ভর্তি ছিলেন ১৩৯ জন। এরমধ্যে ১২৮ জন করোনা নিয়ে ও বাকি ২১ জন উপসর্গ নিয়ে ভর্তি ছিলেন।
হাসপাতালের আইসিইউতে ২০ জন এবং এইচডিইউতে ২৮ জন চিকিৎসাধীন আছেন।
ডা. সুহাস আরও জানান, বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত করোনা ইউনিটে নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ৩৯ জন। এ সময়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৫০ জন। পাঁচজন করোনা পজিটিভ রোগী এবং চারজন উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন।
চীনের সিনোফার্মের টিকা পৌঁছেছে খুলনায়
চীনের সিনোফার্মের তৈরি করোনাভাইরাসের প্রায় ৩৩ হাজার টিকা পৌঁছেছে খুলনায়।
বুধবার দুপুরে টিকা বহনকারী গাড়িটি নগরের স্কুল হেলথ ক্লিনিকের ইপিআই ভবনে পৌঁছালে খুলনার সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহাম্মদের নেতৃত্বাধীন টিকা গ্রহণকারী কমিটি ৩২ হাজার ৮০০ ডোজ টিকা গ্রহণ করে।
সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, বুধবার দুপুরে গ্রহণ করা ৩২ হাজার ৮০০ ডোজ টিকা ইপিআই ভবনের আইএলআরে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। তবে এই টিকা কারা পাবেন, কবে থেকে দেওয়া শুরু হবে, কোথায় দেওয়া হবে, এসব বিষয়ে এখনো কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।
আজকালের মধ্যে এসব বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সিভিল সার্জন বলেন, খুলনা জেলায় করোনার টিকা ফুরিয়ে যাওয়ায় টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। প্রথমডোজ নেওয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারেননি জেলার ৪৭ হাজার ৯৭৯ জন মানুষ।
তিনি বলেন, খুলনায় চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি প্রথম ধাপে ১ লাখ ৬৮ হাজার ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আসে। পরে ৭ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় আরও ১ লাখ ২৫ হাজার ডোজ টিকা আসে। খুলনায় এখন পর্যন্ত প্রথম ডোজের টিকা পেয়েছেন ১ লাখ ৭৫ হাজার ৯৫৭ জন।
টিকা কার্যক্রমে সংশ্লিষ্টরা জানান, এপ্রিলের প্রথম দিন থেকে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়ার সংখ্যা কমতে থাকে। আর ২৬ এপ্রিল প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। তবে তখন দ্বিতীয় ডোজ চলমান থাকে।
টিকার পরিমাণ কমে আসায় প্রথম ডোজ যে হারে দেওয়া হয়েছিল, দ্বিতীয় ডোজে সে হার কমিয়ে টিকা গ্রহণকারীদের কাছে খুদে বার্তা দেওয়া হচ্ছিল।
এক সময় জেলার ১৪টি টিকাদান কেন্দ্রের বেশির ভাগ বন্ধ হয়ে যায়। দু-একটি কেন্দ্রে খুব অল্প পরিমাণে টিকা দেওয়া চলছিল। ১২ জুন খুলনায় দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়া একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। জেলায় ১ লাখ ২৭ হাজার ৯৭৮ জন অক্সফোর্ডের দ্বিতীয় ডোজের টিকা পেয়েছেন।