ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে সোমবার রাতে জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে এক আলোচনা সভায় মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা এ অভিযোগ তোলেন।
শাহাবুদ্দিন মোল্লা বলেন, “শাজাহান খান ঢাকায় গিয়ে খালেদা জিয়াকে গালাগালি করে বক্তব্য দেন। আবার রাতেই মাদারীপুরে এসে জামায়াত-শিবির ও বিএনপিকে নিয়ে মিটিং করেন। তাদের পুনর্বাসন করছেন। এসব কিন্তু ভালো লক্ষণ না।
“আওয়ামী লীগের লোক চিকিৎসার অভাবে ধুঁকে ধুঁকে মরে, আপনি (শাজাহান খান) তাদের সহযোগিতা করেন না। অথচ আপনি সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে গিয়ে বিএনপির লোকদের সহযোগিতা করেন, সেই প্রমাণও আমাদের কাছে আছে।”
এর আগে গত রোববার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদ থেকে শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লার পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা করে ‘শাজাহান খানের সমর্থক’ মুক্তিযোদ্ধারা।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান বর্তমানে সংসদ সদস্য। ষাটের দশকে ছাত্রলীগ দিয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু তার। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের এ নেতা আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে কয়েক দফা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তবে স্বাধীনতার পর জাসদের রাজনীতিতে জড়ান তিনি। এরশাদ সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগে যোগ দেন তিনি।
শাজাহান খানের আগের ইতিহাস টেনে জেলা আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, “১৫ বছর আগে আপনাদের কী ছিল? এখন কী হয়েছেন? এখন যা হয়েছেন, তা রাজৈর-মাদারীপুর মানুষের ভোটে। আপনি এমপি-মন্ত্রী হয়েছেন কিন্তু জনগণের কোনো উন্নয়ন হয়নি, সাধারণ কর্মীদের কোনো উন্নয়ন হয়নি।”
শাহাবুদ্দিন মোল্লা আরও বলেন, “জেলা আওয়ামী লীগের অফিসে আসার মতো সৎ সাহস আপনার নেই। আমার বিরুদ্ধে কোনো কথা থাকলে তা আওয়ামী লীগের পরিবারের মধ্যে আলোচনা করুন। ফেইসবুকে রাজাকার, আল-বদরদের সন্তানদের দিয়ে আমাদের ও আওয়ামী লীগের কুৎসা রচনা করে যাচ্ছেন, এটা ভালো লক্ষণ না। আমি বলতে চাই, এসব বন্ধ করুন।”
শাজাহান খান, তার স্ত্রী ও সন্তান রাজৈর উপজেলার সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ মাদারীপুরের অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি বলেও অভিযোগ করেন এই জেলা নেতা।
এ সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির, সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মাদারীপুর পৌরসভার মেয়র খালিদ হোসেন, যুবলীগের সভাপতি আতাহার হোসেন ব্যাপারী, ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হোসেন অনিকসহ অন্যরা।
তবে যোগাযোগের চেষ্টা করেও এ প্রসঙ্গে সংসদ সদস্য শাজাহান খানের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।