দিনাজপুরে অজানা ‘রোগে’ আক্রান্ত শিশু, হঠাৎ রক্তপাত

দিনাজপুরে অজানা ‘রোগে’ আক্রান্ত এক শিশুর শরীর থেকে হঠাৎ হঠাৎ তাজা রক্ত বের হয়ে আসে, স্থানীয় চিকিৎসায় যার কোনো সুরাহা হয়নি।

দিনাজপুর প্রতিনিধিমোর্শেদুর রহমান, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 May 2021, 01:03 PM
Updated : 19 May 2021, 01:03 PM

আশিকা জান্নাতের (১২) শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ থেকে প্রতিদিন অন্তত ২০ বার রক্তপাত হয় বলে তার স্বজনরা জানান।

আশিকা দিনাজপুর শহরের ৪ নম্বর উপশহরের বাসিন্দা আলমগীর হোসেনের মেয়ে। পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী।

স্থানীয় চিকিৎকরা শিশুটিকে ঢাকায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎকের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

আশিকার মা মাহফুজা খাতুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, গত বছরের রোজার সময় একদিন হঠাৎ আশিকার মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়। তখন চিকিৎকের পরামর্শে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিন দিন থাকার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসে। কিন্তু এরপরও রক্তপাত থামেনি।

“তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ দিয়ে রক্তপাত হয়। নাক, মুখ, কান, চোখ, হাত-পায়ের নখ, হাতের তালু, পায়ের তালু, পিঠ, নাভিসহ বিভিন্ন অংশ দিয়ে রক্ত বের হয়। প্রতিদিন অন্তত ২০ বার রক্ত বের হয়।”

একটু রক্ত বের হওয়ার পর আপনাআপনি আবার তা বন্ধ হয়ে যায় বলে তিনি জানান।

এক বছর ধরে এই অজানা ‘রোগের’ সঙ্গে থেকে শিশু আশিকার এখন আর কোনো ভীতি নেই। রক্ত বের হওয়ার আগের মুহূর্তে সে জানতে পারে কোন অংশ থেকে বের হবে। তখনই হাতে টিসু নিয়ে প্রস্তুত থাকে।

আশিকা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রক্ত বের হওয়ার আগে ব্যাথার কারণে সে বুঝতে পারে কোথায় রক্তপাত হবে। রক্ত বের হওয়া বন্ধ হবার পরও কিছু সময় ব্যথা থাকে সেখানে।

আশিকার সঙ্গে এই প্রতিবেদক কথা বলার সময়ও হঠাৎ তার চোখ দিয়ে রক্ত বের হতে শুরু করে।

আশিকার মা মাহফুজা খাতুন আরও জানান, এক বছর ধরে দিনাজপুর ও রংপুরে চিকিৎসা করে কোনো সুফল পাননি। স্থানীয় চিকিৎসকগণ তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

মেয়ের রোগ নির্ণয় এবং কার্যকর চিকিৎসা দিতে না পেরে তারা হাতাশায় রয়েছেন বলে জানান।

দিনাজপুর পরমাণু চিকিৎসা কেন্দ্রের পরিচালক বি কে বোস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কয়েকদিন আগে শিশু আশিকাকে আমার কাছে এনেছিল। আমি তার আগের নেওয়া চিকিৎসার সবকিছু পর্যালোচনা এবং পরীক্ষা করে দেখেছি। দেশের বিশেষজ্ঞ হেমাটোলজিস্ট দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ভালো কোনো হাসপাতালে চিকিৎসা দিলে সে এই কঠিন রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারে বলে আমার বিশ্বাস।”