রোববার রাজশাহীতে এক অনুষ্ঠানে আইজিপি বেনজীর বলেন, “আমরা ঘর থেকে পরিছন্ন অভিযান শুরু করেছি। আমরা এই ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয়ী। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
দুপুরে রাজশাহী মহানগর পুলিশের ‘হ্যালো আরএমপি অ্যাপ’, ‘অপারেশন কন্ট্রোল অ্যান্ড মনিটরিং সেন্টার’ ও ‘কিশোর গ্যাং ডিজিটাল ডাটাবেজ’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন আইজিপি।
“সেই লক্ষ্য সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী তার দিন বদলের নন্দিত সনদ ‘রূপকল্প ২০৪১’ দিয়েছেন। এর মধ্যে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার এক সুচিন্তিত কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”
তার ধারাবাহিকতায় রাজশাহী মেট্রোপলিটন এলাকার অপরাধ ও অপরাধীকে চিহ্নিতকরণ, অপরাধ দমন, জনসাধারণের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে নতুন অ্যাপস উদ্বোধন করা হলো বলে জানান আইজিপি।
এটি মেট্রোপলিটন এলাকার আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভূমিকা রাখবে বলেও প্রত্যাশা করেন আইজিপি।
রাজশাহী মহানগরীর সিঅ্যান্ডবি মোড়ে মহানগর পুলিশের (আরএমপি) নির্মাণাধীন সদরদপ্তরে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে আরএমপি কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দিক ও রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি আব্দুল বাতেনও উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া রাজশাহী মেট্রোপলিটন ও রাজশাহী রেঞ্জের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
‘কিশোর গ্যাং ডিজিটাল ডাটাবেজ’-এ কিশোর গ্যাংয়ের প্রায় ৪০০ জনের বিস্তারিত তথ্য অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলেও জানানো হয়।
আর ‘হ্যালো আরএমপি অ্যাপ’-এর মাধ্যমে এখন থেকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে তথ্য প্রদান ও অনলাইনে অভিযোগ করা যাবে।
বাংলাদেশ পুলিশের জরুরি সেবা যেমন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট, অনলাইন জিডি এবং ৯৯৯ জাতীয় জরুরি সেবাসমূহ এই অ্যাপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
এই অ্যাপ থেকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সব কর্মকর্তাদের ফোন নম্বর, মোবাইল নম্বর এবং ই-মেইল ঠিকানা পাওয়া যাবে। এছাড়া এই অ্যাপের মাধ্যমে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের ওয়েব পোর্টাল এবং অনলাইন নিউজ পোর্টালটিও দেখা যাবে বলে সাংবাদিকদের জানানো হয়।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের নির্মাণাধীন সদরদপ্তরে অনুষ্ঠানের পর জেলা পুলিশ লাইন্সে মতবিনিময় সভায় যোগ দেন আইজিপি।
পুলিশ লাইন্সের সভায় আইজিপি বলেন, হুইসেল বাজিয়ে শুধু নিজেদের নয়, চারপাশকেও দুর্নীতিমুক্ত রাখতে হবে।
আইজিপি বলেন, "আমরা দুর্নীতিমুক্ত পুলিশ গড়ে তুলতে চাই। দুর্নীতি করে কেউ বড়লোক হতে চাইলে তার জন্য পুলিশের চাকরি নয়।"
মাদকের বিরুদ্ধে শূন্য সহিঞ্চুতার কথা পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, "মাদকমুক্ত পুলিশ গড়তে সর্বস্তরের পুলিশ সদস্যদের জন্য ডোপ টেস্ট চালু করা হয়েছে। পুলিশকে মাদকমুক্ত রাখতে এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
"একজন পুলিশ সুপার হতে পারেন একজন 'চেঞ্জ মেকার', প্রত্যেক পুলিশ সদস্য হতে পারেন এক একজন 'চেঞ্জ এজেন্ট'।"
জাতিগঠনমূলক কাজে পুলিশ সদস্যদের সুযোগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, "পুলিশের চাকরি করতে হবে ভালোবেসে, চাকরিতে 'প্রাইড' নিয়ে আসতে হবে, যাতে আমাদের সন্তানরা গর্বভরে বলতে পারে আমার বাবা পুলিশ ছিলেন, আমার মা পুলিশ ছিলেন। আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের 'জনগণের পুলিশ' হতে চাই।"
বিট পুলিশিংয়ের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, "বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে আমরা দেশের জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে চাই।"
রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আব্দুল বাতেনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন আরএমপি কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক।
এছাড়াও সভায় রাজশাহী রেঞ্জ এবং আরএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, রাজশাহী রেঞ্জ অধীন সকল জেলার পুলিশ সুপারগণ উপস্থিত ছিলেন।