বুধবার মধ্যরাতে মাছ ধরতে নামা জেলেরা বলছেন, যে পরিমাণে মাছ উঠছে, ‘তাতে নৌকার জ্বালানি খরচও মেটে না।’
বৃহস্পতিবার চাঁদপুরে এক কেজি ওজনের ইলিশ ৯শ’ টাকা থেকে এক হাজার টাকা এবং এক কেজি থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ১২শ’ থেকে ১৫শ’ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে বলে জানান হরিনা ফেরিঘাট এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী মিলন গাজী।
তার আশা আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির দিকে জেলেরা তাদের কাঙ্খিত ইলিশের দেখা পাবে।
ইলিশ অভয়াশ্রম কর্মসূচির আওতায় মা ইলিশ রক্ষায় গত ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের উপকূলীয় ১৯টি নদ-নদীসহ চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা ছিল।
বৃহস্পতিবার সকালে সদর উপজেলার মেঘনা নদী তীরে হরিণা মাছঘাট, বহরিয়া ও রনাগোয়াল মাছঘাটে সরেজমিনে দেখা যায়, ঘাটে ইলিশের আমদানি অনেক কম। কিছু নৌকা ঘাটে ভিড়লেও তাতে ইলিশের পরিমাণ খুবই কম। আড়তগুলোতে ইলিশের আমদানি কম থাকায় বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে।
হরিণা ফেরিঘাট এলাকার জেলে আবুল কাশেম বলেন, বুধবার মধ্যরাতে জাল নিয়ে নদীতে নেমেছি।
“রাতভর জাল টেনে যেই পরিমাণ মাছ পেয়েছি তাতে আমাদের খরচের টাকাই উঠছে না।”
অনেক আশা নিয়ে ইলিশ ধরতে নেমে গেলেও হতাশা নিয়ে ফিরে তিনি যোগ করেন, “আগামী দিনগুলোতেও নদীতে ইলিশ না পেলে পরিবার নিয়ে চলাটাই কষ্ট করে হয়ে যাবে।”
হরিনা মাছ ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী আবদুল জলিল বলেন, অভয়াশ্রম শেষে জেলেরা নদীতে ইলিশ ধরতে নামছে কিন্তু জালে মাছ কম পাওয়ায় আড়তে ইলিশের আমদানিও হচ্ছে কম।
“তাই আমাদের বেশি দামে ইলিশ কিনে বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি মূল্যে।”
এবার নিষেধাজ্ঞার এ সময় চাঁদপুরে ২৮৫টি অভিযান চালিয়ে ৭০৪ লাখ মিটার কারেন্ট জাল, পাঁচ টন ইলিশ জব্দ করা হয় বলে জানান জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুল বাকী।
তিনি আরো জানান, এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতে দুই শতাধিক জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হয়েছে।
চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনা নদীতে মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত রয়েছে ৫২ হাজার জেলে। এদের মধ্যে ৫০ হাজার জেলেকে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে সরকারিভাবে ২০ কেজি করে চাল সহায়তা দেওয়া হয়।