এবার হলদিবাড়ি সীমান্ত ছুঁল বাংলাদেশের ট্রেন

ভারতীয় ট্রেন ইঞ্জিনের সীমান্তে ছুঁয়ে যাওয়ার তিন সপ্তাহ পর বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি ইঞ্জিনও সীমান্ত ঘুরে এল। এখন শুধু চিলাহাটি-হলদিবাড়ি ট্রেন চলাচল শুরুর অপেক্ষা।

নীলফামারী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Oct 2020, 02:29 PM
Updated : 27 Oct 2020, 02:29 PM

চলতি বছরের ডিসেম্বরে এই রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে বলে নীলফামারী জেলা প্রশাসন ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

চিলাহাটি-হলদিবাড়ি নবনির্মিত রেলপথে বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি ইঞ্জিন মঙ্গলবার পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হয়।

একইভাবে গত ৮ অক্টোবর চিলাহাটি সীমান্ত ছুঁয়ে গেছে ভারতীয় রেলওয়ের একটি ইঞ্জিন।

মঙ্গলবার ফিতা কেটে নবনির্মিত ওই পথে পরীক্ষামূলক রেল চলাচলের উদ্বোধন করেন নীলফামারীর জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরী।

এরপর বেলা ১২টার দিকে চিলাহাটি রেলস্টেশন থেকে ভারতের হলদিবাড়ি রেলপথে ছেড়ে যায় একটি ইঞ্জিন। লোকো মাস্টার মনিরুল ইসলাম (৪০) বাংলাদেশ রেলওয়ের ৬৫০৯ বি-ই-ডি-৩০ ইঞ্জিনটি দুই দেশের সীমান্তের শূন্য রেখা পর্যন্ত নিয়ে ফিরে আসেন বেলা ২টার দিকে।

ওই আনুষ্ঠানিকতায় উপস্থিত ছিলেন ৫৬ বিজিবির কমান্ডার মামুনুল হক, বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা আনন্দ মোহন চক্রবর্তী, বিভাগীয় প্রধান প্রকৌশলী আল ফাত্তাহ মোহাম্মদ মাসুদর রহমান, বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক সহিদুল ইসলাম, বিভাগীয় সিগন্যাল ও টেলিকম প্রকৌশলী রূবাইয়াত শরীফ, প্রধান পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান উদ্দিন, চিলহাটি বর্ডার লিঙ্ক রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক আব্দুর রহীম প্রমুখ।

তারা ওই রেল ইঞ্জিনে চরে ভারতী সীমান্তে যান। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানান অপর প্রান্তের সীমান্ত রেখায় অপেক্ষারত ভারতীয় প্রতিনিধি দল।

বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানাতে ভারতীয় দলের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী প্রবীণ কুমার দে, উপ-প্রধান প্রকৌশলী ভিকে মিনা, সিনিয়র মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ার বিপ্লব ঘোষ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, “আমরা আশা করছি চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেল পথে আগামী বিজয় দিবসে পণ্যবাহী ট্রেন, আর স্বাধীনতা দিবসে যাত্রিবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হবে। অথবা বিজয় দিবসেও যাত্রিবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে। এই বিষয়টি দুই দেশের কূটনৈতিক পর্যায়ে চূড়ান্ত করে একটা ঘোষণা আসবে শীঘ্রই।”

এই সময় রেলপথের উভয় পাশে উৎসুক মানুষের ভিড় জমেছে।

৩৫ কিলোমিটার দূর থেকে এসেছিলেন ডোমার উপজেলার হরিণচড়া ইউনিয়নের রায়হান আলী (৫০)।

তিনি বলেন, “বাবার কাছে শুনেছি আগে এই পথে ট্রেন চলেছিল। সে ট্রেনে আমার বাবা ভারতের কলকাতা পর্যন্ত ঘুরে এসেছিল। এরপর বন্ধ হলে দীর্ঘ ৫৫ বছর পর আমিও ট্রেনে এই পথে ভারতে চলাচলের স্বপ্ন দেখছি।”

১৯৬৫ সালের পর চিলাহাটি-হলদিবাড়ি পরিত্যক্ত রেলপথটি চালুর উদ্যোগ নেয় দুই দেশের সরকার। এ উদ্যোগে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার চিলাহাটি রেলস্টেশন থেকে সীমান্ত পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। ভারতের হলদিবাড়ি রেল স্টেশন থেকে সীমান্ত পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করে দুই দেশের সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে।  

১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের পর দুই দেশের মধ্যে রেল চলাচল বন্ধ হয়েছিল।