এবার কিশোর গ্যাংয়ের ‘ধর্ষণের ভিডিও ফাঁস’, আটক ৪

নোয়াখালীতে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও সিলেটে এসসি কলেজে গৃহবধূকে ‘দলবেঁধে ধর্ষণে’ তোলপাড়ের মধ্যে এবার ঢাকার আশুলিয়ায় কিশোর গ্যাংয়ের ধর্ষণের ভিডিও ফাঁসের কথা জানাল পুলিশ।

সাভার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Oct 2020, 09:47 AM
Updated : 7 Oct 2020, 02:32 PM

বুধবার আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম বলেন, ঘটনার ৩৬ দিন পর ভিডিও ফাঁস হলে প্রশাসনের নজরে আসে বিষয়টি।

তিনি জানান, এই ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে আশুলিয়ার ভাদাইল ও নয়ারহাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিন কিশোরকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া এই কিশোর গ্যাংয়ের ‘দলনেতাকে’ খুলনা থেকে আটক করে আশুলিয়া আনা হয়।

এই দলের একজন ভাদাইল এলাকায় শাক বিক্রি করে; বাকিরা শিক্ষার্থী বলে পুলিশ জানিয়েছে।

জিয়াউল বলেন, “গত ৩০ অগাস্ট আশুলিয়ার ভাদাইলের পবনারটেক এলাকায় প্রতিবেশী দুই তরুণকে নিয়ে দুই কিশোরী বান্ধবী পাশের গুলিয়ারচক এলাকায় বেড়াতে যায়। সেখানে কিশোর গ্যাংয়ের ১০ থেকে ১২ জন ওই দুই তরুণকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। পরে দুই কিশোরীকে গণধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করে।

“ঘটনাটি দলের একজনের বাবা টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এদিকে তাদের হুমকিতে ভয়ে এক কিশোরী নিজ গ্রামে চলে যায়।”

ওই কিশোরীদের সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া এক তরুণ সাংবাদিকদের বলেন, আশুলিয়ার ভাদাইল এলাকায় ভাড়া থেকে স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করত তাদের দুই বান্ধবী। ৩৬ দিন আগে তাদের নিয়ে ভাদাইলের গুলিয়ারচক এলাকায় বেড়াতে যান তারা। এ সময় তাদের চারপাশ দিয়ে ১০ থেকে ১২ জন ছেলে ঘিরে ফেলে মেয়েদের সঙ্গে কী সম্পর্ক জানতে চায়।

“তারা আত্বীয় পরিচয় দিলেও কোনো কিছু শুনতে না চেয়ে এক পর্যায়ে মারধর করে দুই জনকে তাড়িয়ে দেয় ও কাউকে এই ঘটনা বললে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। তবে কিশোরীদের আটকে রাখে। পরে তাদের কী হয়েছে জানতে পারিনি। তবে ভিডিও ফাঁস হওয়ার বিষয়টি পরে জানতে পারি।”

পরিদর্শক জিয়াউল বলেন, “কিশোর গ্যাংয়ের নিজেদের দ্বন্দ্বের জেরে ভিডিও ফাঁস করা হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশ ওই ভিডিওর সূত্র ধরে অভিযান চালিয়ে চার জনকে আটক করে। এ ঘটনায় এক কিশোরীকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং হামলার শিকার দুই তরুণকে শনাক্ত করা হয়েছে।”

এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদেরও আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।

গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের ৩৫ বছর বয়সী এক গৃহবধূর বাড়িতে ঢুকে একদল যুবক তাকে বিবস্ত্র করে শারীরিকভাবে নির্যাতন চালায় এবং তার ভিডিও ধারণ করে। একমাস পর ৪ অক্টোবর ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

এই ঘটনায় ওই নারী রোববার রাতে নয়জনের নাম উল্লেখ করে বেগমগঞ্জ থানায় পর্নোগ্রাফি আইন এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দুটি মামলা করেছেন।

তোলপাড় সৃষ্টিকারী আরেকটি ঘটনা ঘটেছে সিলেটের এমসি কলেজে।

গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেটের টিলাগড় এলাকায় এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া এক গৃহবধূকে ক্যাম্পাস থেকে তুলে ছাত্রাবাসে নিয়ে ধর্ষণ করে কয়েকজন ছাত্রলীগকর্মী।

এ ঘটনায় পরদিন তার স্বামী বাদী হয়ে শাহপরান থানায় ছাত্রলীগকর্মী সাইফুর রহমানকে প্রধান আসামি করে নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

এই দুটি ঘটনায় শিক্ষার্থীসহ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে দেশের সর্বস্তরের মানুষ প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে।