বগুড়ায় শাশুড়ির টাকা আত্মসাতের মামলায় আ. লীগ নেতা

বগুড়ায় শাশুড়ির শতকোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।

বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Oct 2020, 02:49 PM
Updated : 6 Oct 2020, 02:49 PM

শাশুড়ি দেলওয়ারা বেগম গত বৃহস্প্রতিবার বগুড়া সদর থানায় অভিযোগ দেন; সোমবার তা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।  

নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রানার বিরুদ্ধে তার শাশুড়ির শতকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রেজাউল করিম বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি তদন্তের পর সোমবার রাতে এজহার হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।

আনোয়ার হোসেন রানা নন্দীগ্রাম উপজেলা সদরের কলেজপাড়ার সামছুল হকের ছেলে। উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রানা বগুড়া জেলা পরিষদেরও সদস্য।

মামলায় রানার স্ত্রী আকিলা সরিফা সুলতানা খানম আঞ্জুয়ারাকেও আসামি করা হয়েছে। 

দেলওয়ারা বেগম বগুড়া সদরের কাটনারপাড়ার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী প্রয়াত শেখ সরিফ উদ্দিনের স্ত্রী। গত ৫ বছর ধরে দেখাশোনার অজুহাতে তার কাছেই ছিলেন মেয়ে-জামাই।

সেবা-শুশ্রূষার অজুহাতে কখনও শাশুড়িকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে আবার কখনো জিম্মি করে রানা টাকা আত্মসাৎ করেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।

অভিযোগে বলা হয়, স্বামীর মৃত্যুর পর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সরিফ বিড়ি ফ্যাক্টরী পরিচালনা করছিলেন তিনি। এই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসেবে ছিলেন তার পাঁচ মেয়ে আকিলা সরিফা সুলতানা, মাহবুবা সরিফা সুলতানা, নাদিরা সরিফা সুলতানা, কানিজ ফাতিমা ও তৌহিদা সরিফা সুলতানা।

অংশিদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে তারা শহরের শাকপালা ও চারমাথা এলাকায় সরিফ সিএনজি লিমিটেড নামের দুটি ফিলিং স্টেশন এবং নবাববাড়ি রোডে দেলওয়ারা-শেখ সরিফ উদ্দিন সুপার মার্কেট পরিচালনা করে আসছিলেন।

দেলওয়ারা বেগম আরও অভিযোগ করেন, শারীরিক অসুস্থতা ও বার্ধক্যজনিত কারণে জামাই আনোয়ার হোসেন রানা ও মেয়ে আকিলা সরিফা সুলতানাকে ব্যবসা দেখাশোনার মৌখিক অনুমতি দেন। 

কিন্তু এক পর্যায়ে তাকে অস্ত্রের মুখে জম্মি করে ফাঁকা স্ট্যাম্প, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক চেক ও এফডিআরসহ বিভিন্ন নথিপত্রে তার সই নেন জামাই। এরপর তার নিজের নামীয় ব্যাংক একাউন্ট থেকে নগদ টাকাসহ এফডিআর ভাঙিয়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকারও বেশি তুলে নেন।

২০১৫ সালের ১ জুন থেকে এই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই অর্থ তুলে আত্মসাৎ করেছেন মেয়ে-জামাই। এরই বাইরে একই সময়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও তার নামীয় ব্যাংক হিসাব থেকে আরও ৫০ লাখ টাকা তুলে আত্মসাৎ করেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, আনোয়ার হোসেন রানা পিস্তল উঁচিয়ে শাশুড়িকে হত্যার হুমকি দেন। গত ২১ সেপ্টেম্বর বাসার আলমারি-সিন্দুক থেকে নগদ অর্থ, ব্যাংকের চেক, এফডিআর এবং ব্যবসায়ীক সকল নথিপত্র নিয়ে কাউকে কিছু না বলে চলে যান।