স্থানীয় মৎসজীবীরা বলছেন, প্রতিটি ম্যাজিক জালের দাম ৬ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা হলেও এতে প্রচুর মাছ ধরা পড়ে। আর এতে লাভ থাকায় জালের টাকা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে; ফলে জেলেরা এই জালে মাছ ধরায় ঝুঁকচ্ছেনও বেশি।
ম্যাজিক জালে মাছের পাশাপাশি প্রচুর জলজ প্রাণিও মারা পড়ছে। তাই ম্যাজিক জালের ব্যাবহার বন্ধ না হলেও আগামী এক-দুই বছরের মধ্যে এ অঞ্চলে দেশীয় মাছ একেবারেই বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন জেলা মৎস কর্মকর্তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কাশিয়ানী উপজেলার রামদিয়া গ্রামের দুজন জেলে জানান, ম্যাজিক জালে খুব সহজেই প্রচুর মাছ ধরা পড়ে। তাই বর্ষার শুরু থেকে তারা এ জাল দিয়ে মাছ ধরছে। কারেন্ট জালের চেয়ে ম্যাজিক জালে বেশি মাছ ধরা পড়ে; এতে আয় ও বেশি হয়। এ কারণে মৎস্যজীবীরা ম্যাজিক জালের মাছ ধরতে আগ্রহী হচ্ছেন বেশি। প্রতিটি ম্যাজিক জালের দাম ৬ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা। ম্যাজিক জালে প্রচুর মাছ ধরাপড়ায় কয়েক দিনের মধ্যে জালের টাকা উঠে আসে।
গোপালগঞ্জ মৎস্য ডিপ্লোমা ইনস্টিটিটের অধ্যক্ষ নারায়ণ চন্দ্র দাস বলেন, “ম্যাজিক জাল বাংলাদেশে নতুন এসেছে। এ জাল দিয়ে প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত দেশি প্রজাতির পুঁটি, ট্যাংরা, কই, শিং, মাগুর, মেনি, খলিশা, শৈল, টাকিসহ বিভিন্ন প্রজাতির মা মাছ ও পোনা মাছ নির্বিচারে ধ্বংস করা হচ্ছে; এতে দেশীয় প্রজাতির মাছ উজার হচ্ছে। সেই সাথে বিপন্ন হচ্ছে কুচি, ব্যাঙ, সাপসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণি।”
গোপালগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ বৈরাগী ম্যাজিক জালের অবাধ ব্যবহারের কথা স্বীকার করে বলেন, “অবৈধ ম্যাজিক জাল বা ফাঁদ বিল-বাওর, নদী-নালা, খাল ও মুক্ত জলাশয়ের মৎস্য সম্পদের জন্য একটি বিরাট হুমকি। কাশিয়ানী উপজেলার বিভিন্ন জলাশয়ে অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার ১৫টি ম্যাজিক জাল আটক করে ধ্বংস করা হয়েছে।”
তবে ম্যাজিক জাল ব্যবহার বন্ধে মৎস্যজীবীদের সচেতন করা হচ্ছে বলে জানান এ মৎস কর্মকর্তা।